মিশর থেকে ভাড়ায় দুই এয়ারক্রাফট এনে রাষ্ট্রের ১১ শ কোটি টাকা গচ্চার ঘটনায় দুই দিনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সাত কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানায় দুদক। তবে আরও দুই কর্মকর্তাকে দুদকের ডাকে সাড়া দিয়ে হাজির হননি।
উপপরিচালক আনোরুল হক ও সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তারের জিজ্ঞাসাবাদকারী দল এই জিজ্ঞাসাবাদ পরিচালনা করে।
সংস্থার উপসহকারী পরিচালক শফিউল্লাহ আদনান সাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মঙ্গলবার সিভিল এভিয়েশন অথরিটির প্রিন্সিপাল এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর সাইফুল হক শাহ, এয়ার ওয়ার্থনেস কনসালটেন্ট গোলাম সারওয়ার, বিএফসিসি ম্যানেজার সাদেকুল ইসলাম ভূইয়া ও কামাল উদ্দিন আহমেদকে মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
সোমবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় প্রধান প্রকৌশলী (মেনটেইনেন্স) এসএম সিদ্দিক, আই অ্যান্ড কিউএর প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার এসএম হানিফ এবং এমসিসির প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার দেবেশ চৌধুরীকে।
এদিন ফ্লাইট অপারেশন পরিচালক এবং পরিদর্শক দলের টিম লিডার ইশরাত আহমেদ হাজির হননি।
২০১৪ সালে পাঁচ বছরের চুক্তিতে মিশরের ইজিপ্ট এয়ার থেকে বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর মডেলের উড়োজাহাজ দুটি লিজ নেয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। প্রথম বছর শেষেই দুই এয়ারক্রাফটেরই ইঞ্জিন বিকল হয়। এগুলো প্রায় ১২ থেকে ১৫ বছরের পুরানো এবং এর উড্ডয়ন যোগ্যতার মেয়াদকাল কম থাকায় ইঞ্জিনগুলো পুরোপুরি বিকল হয়ে যায়।
উড়োজাহাজ সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। দেড় বছরের মাথায় নষ্ট হয় বাকি ইঞ্জিনটিও। এতে পাঁচ বছরে দেশের ক্ষতি হয়েছে ১১শ কোটি টাকা, যা একাদশ জাতীয় সংসদের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির তদন্তে উঠে এসেছে।
স্থায়ী কমিটির পাঠানো ওই প্রতিবেদনের আলোকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। প্রয়োজনে এর সঙ্গে জড়িত অন্যান্য কর্মকর্তাদেরও পর্যায়ক্রমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
দুদক জানায়, এখানে লিজ চুক্তির এবং দরপত্রের স্পেসিফিকেশনে কোনো দুর্বলতা আছে কি না এগুলোর অনুসন্ধান চলছে। নতুন করে অধিযাচন পত্র পাঠানো হয়েছে। চাওয়া হয়েছে ইজিপ্ট এয়ারের সঙ্গে হওয়া লিজ চুক্তির কপি ও বিমান লিজ সংক্রান্ত প্ল্যানিং এবং মূল্যায়ন প্রতিবেদন, ইঞ্জিন বিকল এবং এর মেইন্টেনেন্স এর প্রতিবেদনসহ আর্থিক ব্যয় বিবরণী।
প্রয়োজনে এর সাথে জড়িত অন্যান্য কর্মকর্তাদেরও পর্যায়ক্রমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে দুদক।