দুর্নীতির দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজার মেয়াদ আগের শর্তে আরও ৬ মাসের জন্য স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ সোমবার এ প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এ নিয়ে খালেদা জিয়ার ১৭ বছরের সাজা ষষ্ঠবারের মতো স্থগিত করা হলো।
সুরক্ষা সেবা বিভাগের কারা অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ বেলাল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২৫ সেপ্টেম্বর, তবে আগেভাগে সাজা স্থগিতের মেয়াদ বৃদ্ধি পাওয়ায় তাকে আর কারাগারে ফিরতে হচ্ছে না। ২০২৪ সালের ২৫ মার্চ পর্যন্ত তিনি দেশের অভ্যন্তরে তার মতো করে থাকতে পারবেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাগারে যান বেগম খালেদা জিয়া। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শেষে ওই বছরের অক্টোবরে সাজা বেড়ে দ্বিগুণ হয় বিএনপি নেত্রীর। একই মাসে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় আরও ৭ বছরের সাজা হয় তার।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন বিএনপির নেত্রী। তার জামিনের আবেদন বারবার নাকচ হওয়ার মধ্যে স্বজনরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে মুক্তির আবেদন নিয়ে যান। আর সরকারপ্রধানের নির্বাহী আদেশে ওই বছরের ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য মুক্তি পান বিএনপিপ্রধান।
সে সময় সরকার এবং বিএনপির পক্ষ থেকে দুটি শর্তের কথা বলা হয়। প্রথমত, সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে যাবেন না। দ্বিতীয়ত, তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন।
২০২১ সালে বিএনপি নেত্রী করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর বাসায় থেকে চিকিৎসা নেয়ার শর্ত আর থাকেনি। এরপর খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করা হয়।
দেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসা নেই এবং তিনি জীবন সায়াহ্নে দাবি করে বিএনপি দেশজুড়ে নানা কর্মসূচিও পালন করে, তবে সরকার দেশের বাইরে যেতে না দেয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকে।
এর মধ্যে বিএনপি নেত্রীর সাময়িক মুক্তির মেয়াদ চতুর্থবারের মতো বাড়ানো হয় গত ২৬ মার্চ। সেটি শেষ হতে যাচ্ছিল ২৫ সেপ্টেম্বর।
এই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, স্বজনরা আবেদন করলেই সাজা স্থগিতের মেয়াদ আবার বাড়ানো হবে।
গত ১১ সেপ্টেম্বর সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করে খালেদা জিয়ার পরিবার। এর পরিপ্রেক্ষিতে মেয়াদ বাড়ায় সরকার।