কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে জন্মের পর ফেলে যাওয়া সেই নবজাতকের দায়িত্ব পাচ্ছেন একজন ম্যাজিস্ট্রেট। তিনি এসিল্যান্ড হিসেবে সিলেট বিভাগে কর্মরত রয়েছেন।
শনিবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে মতবিনিময় সভায় এ বিষয়ে জানান কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. সাইদুল ইসলাম। শিশুটির লালনপালনে যাতে কোনো জটিলতা না হয় সে জন্য তার নতুন বাবা-মায়ের নাম-পরিচয় গোপন রাখার কথা বলেন তিনি।
১০ বছর বিবাহিত জীবনে ওই দম্পতির কোনো সন্তান হয়নি। চিকিৎসকরা ওই দম্পতিকে জানিয়েছেন, স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় তাদের সন্তান হওয়ার সম্ভাবনাও নেই।
গত ৭ সেপ্টেম্বর জন্ম দিয়ে নবজাতককে হাসপাতালে ফেলে রেখে পালিয়ে যান তার মা। ভুল নাম-পরিচয় দিয়ে ওই দিন ভোরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। সকাল ৮টার দিকে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে ওই নারী ছেলেসন্তানের জন্ম দেন। কিছুক্ষণ পর ওই নারীকে ওয়ার্ডে পাঠানো হলে তিনি নবজাতক সন্তানকে ফেলে পালিয়ে যান।
জন্মের পর থেকে ওই নবজাতক ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের নবজাতকদের বিশেষ পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এম এ মোমেন জানান, শিশুটি বর্তমানে শারীরিকভাবে সুস্থ রয়েছে।
জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলাম জানান, নবজাতক ওই শিশুটির দায়িত্বভার নেয়ার জন্য কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ১৪ জন দম্পতি আগ্রহ প্রকাশ করে আবেদন করেন। আবেদনকারীদের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, প্রবাসী, চিকিৎসক, প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ ছিলেন। আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করার জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিশুকল্যাণ বোর্ডের সভা আহ্বান করা হয়। সভায় ১৮ জন সদস্যের প্রত্যেকেই উপস্থিত ছিলেন। আবেদনগুলো বিশ্লেষণ শেষে শিশুটির সর্বোত্তম স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে শিশু আইন ২০১৩ সংশোধিত ২০১৮ (৮৬) ধারা অনুযায়ী সর্ব সম্মতিক্রমে আবেদনকারী দম্পতিদের মধ্য থেকে এক দম্পতির কাছে শিশুটির দায়িত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
জেলা প্রশাসক জানান, দু-এক দিনের মধ্যেই শিশুটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ওই দম্পতির কাছে দেয়া হবে।
মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক আরিফুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি ও শিক্ষা) আ ন ম আবুজর গিফারী, এনডিসি শাহেদ আরমান, কুষ্টিয়ার সমাজসেবা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক মুরাদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।