চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আল ইমরান হত্যা মামলার প্রধান আসামি মাসুদ রানাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম।
শুক্রবার আলমডাঙ্গার গোবিন্দপুর এলাকায় ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগের এই নেতাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
মোটরসাইকেলে করে এসে অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করে কয়েকজন যুবক। এরপর তারা মোটরসাইকেলে করেই পালিয়ে যান।
যে স্থানে পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আল ইমরানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ছবি: নিউজবাংলা
নিহত আল ইমরান আলমডাঙ্গা পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি গোবিন্দপুর গ্রামের জুড়ান আলীর ছেলে। তিনি রাজনীতির পাশাপাশি বৈদ্যুতিক মিস্ত্রির কাজ করতেন।
সংবাদ সম্মেলনে ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘পূর্ব শত্রুতার জেরে শুক্রবার আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার গোবিন্দপুরে পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আল ইমরানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় শনিবার দুপুরে বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা আব্দুল জলিল। পরে অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি মাসুদ রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
গ্রেপ্তারের পর আলমডাঙ্গা আমলি আদালতে তোলা হলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মাসুদ। পরে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত।
গ্রেপ্তার মাসুদ রানা গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা।
তিনি আরও জানান, মামলার অন্য আসামিরা হলেন আলমডাঙ্গার নওদা বন্ডবিল গ্রামের সাকিব হোসেন, ডাউকি গ্রামের সাকিব রহমান , গোবিন্দপুর গ্রামের আশরাফুল হক বাবু, নওদা বন্ডবিল গ্রামের আনার আলীর ছেলে তারেক মনোয়ার হৃদয় (২২), একই গ্রামের ফিরোজ হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪-৫ জন।
নিহত ইমরানের বাবা আব্দুল জলিল বলেন, ‘গত ৪-৫ মাস আগে আলমডাঙ্গা সরকারী কলেজে র্যাগিংকে কেন্দ্র করে আমার ছেলে আল ইমরানের সঙ্গে আসামিদের বিরোধ সৃষ্টি হয়। ১৫ দিন আগে গোবিন্দপুর নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আমার বড় ছেলে আসাদুজ্জামান বেল্টুর সঙ্গে আসামি আশরাফুল হক বাবুর দেখা হলে তিনি আমার ছোট ছেলেকে মেরে দেয়ার হুমকি দেন।’
এদিকে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, আলমডাঙ্গার গোবিন্দপুর মাঠপাড়ার ব্যাংকার ফখরুল ইসলামের বাড়ির সামনে বসে ছিলেন ইমরান। একই এলাকার দুই-তিনজন যুবক একটি মোটরসাইকেলে এসে তাকে রামদা দিয়ে পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপায়।
রক্তাক্ত ইমরানকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান, পথেই মারা গেছেন ইমরান।
ইমরানের প্রতিবেশী মাসুদ রানা সোহেল অবশ্য বলেছেন, সকালে বাড়ি থেকে অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন যুবক ইমরানকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায় তারা।
তিনি জানান, ইমরানকে হাসপাতালে নেয়ার সময় তার স্বজনদের কাছ থেকে এই কথা জেনেছেন তিনি।