রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রচারে ঝাপিয়ে পড়েছেন বাগমারার মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রেজাউল হক। তার দুই স্ত্রী নাছিমা বিবি ও ফিরোজা খাতুন এই নির্বাচনে সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন।
প্রথম স্ত্রী নাছিমা তালাকের কথা শুনেছেন, তিনি তিনি মাঠে অটল। আর রেজাউল তার দ্বিতীয় স্ত্রীর পক্ষে গণসংযোগে নেমেছেন।রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত সদস্য পদে প্রার্থী হন নাছিমা ও ফিরোজা। ১৫ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর তারা প্রচারে নামেন। এর মধ্যে রেজাউল নাছিমাকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য বলেন। ভোটে নাছিমা অনড় থাকায় রেজাউল ৪ সেপ্টেম্বর তাকে তালাক দেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রেজাউল তার কার্যালয়ে ইউপির সাধারণ সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সামনে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেয়ার বিষয়টি জানান। তিনি জানান, তার মতামত উপেক্ষা করে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কারণে তিনি প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন।
এরপরই এলাকায় এনিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
স্থানীয়রা জানান, নাছিমা বিবি মাড়িয়া ইউনিয়নের শিকদারী এলাকায় রেজাউলের নিজ বাড়িতে থাকেন। দ্বিতীয় স্ত্রী ফিরোজা খাতুন বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগে তারা কেউ রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না। কিছুদিন আগে থেকে নাছিমা সংরক্ষিত সদস্য পদে প্রার্থী হচ্ছেন বলে প্রচার চালিয়ে আসছিলেন। পরে দ্বিতীয় স্ত্রী ফিরোজা খাতুনও প্রচারে নামেন। তার পক্ষে নামেন রেজাউলও।
তালাক দেয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে রেজাউল বলেন, ‘আমার অবাধ্য হয়ে সে ভোটে প্রার্থী হয়েছে। এ কারণে আমি তাকে এফিডেফিটের মাধ্যমে তালাক দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আমি দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে ভোটের মাঠে প্রচার চালাচ্ছি। তার জন্য ভোট চাচ্ছি। কাজ করছি।’
প্রথম স্ত্রী আগে থেকে মাঠে থাকলেও তাকে বসতে বলার কারণ জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘ও তো প্রার্থী হওয়ার কথা না। ওই রকম মেয়ে সে নয়।’
নাছিমা বিবি জানান, তিনি তালাকের বিষয়টি শুনেছেন। এখনও কোনো কাগজ পাননি। তিনি বর্তমানে স্বামীর বাড়ি আছেন, সেখানেই থাকবেন। নির্বাচন থেকেও তিনি সরে দাঁড়াবেন না।
রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, ১৭ অক্টোবর রাজশাহী জেলা পরিষদের ভোট। নির্বাচনে বাগমারা, মোহনপুর ও দুর্গাপুর নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত আসনে সদস্য পদে সাত প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে মাড়িয়া ইউপির চেয়ারম্যানের দুই স্ত্রী নাছিমা বিবি ও ফিরোজা খাতুন রয়েছেন। অন্য পাঁচ প্রার্থী হলেন- পারুল বিবি, সুলতানা পারভীন, রাবেয়া খাতুন, লাল বানু ও নারগিস বিবি।