বিএনপি নির্বাচনের ‘অযোগ্য’ হয়ে পড়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দিশা না পেয়ে তারা ষড়যন্ত্রের পথ খুঁজছে। দুর্নীতির কারণে তারা জনবিচ্ছিন্ন দলে পরিণত হয়েছে। জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে, আগামীতেও করবে।
নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে শনিবার ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দুজনেই দণ্ডপ্রাপ্ত। আইন অনুযায়ী তাদের একজনও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। নেতৃত্বশূন্য দলটি এখন ষড়যন্ত্রের পথ খুঁজছে, মিথ্যা তথ্য দিয়ে তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টায় লিপ্ত।
‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার এখন মিউজিয়ামে চলে গেছে। সে বিষয়ে আলাপ করে লাভ নেই। ভোটের মাঠে আসতে হবে, জনরায় নিয়ে সরকার গঠন করতে হবে। বিএনপি দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত করতে চায়। তারা সব সময় ষড়যন্ত্র করে।’
ফের সরকার গঠনের আশাবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়ন ও শান্তির জন্য জনগণ নৌকাকে বেছে নেবে। উন্নয়নের যাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে সরকারের ধারাবাহিকতা থাকা প্রয়োজন।’
জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যোগ দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ছবি: নিউজবাংলা
নরসিংদী মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়াম মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ‘রাজাকারের সন্তান’ অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘এখনও মির্জা ফখরুল মনেপ্রাণে পাকিস্তানের সমর্থক। ১৯৭১ সালে তার বাবা ছিলেন রাজাকারদের নেতা। ঠাকুরগাঁওয়ের মুক্তিযোদ্ধাদের ভয়ে জীবন বাঁচানোর জন্য তিনি ভারতে গিয়ে ছয় মাস পালিয়ে ছিলেন। সে কারণেই দুদিন আগে তার ছেলে বলেছেন, পাকিস্তান আমলে ভালো ছিলেন।
‘বাঙালিরা আজ যা কিছু পেয়েছে সব কিছু এই আওয়ামী লীগের হাত ধরেই এসেছে। দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জীবন দিয়েছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এই দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে।’
নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। ছবি: নিউজবাংলা
জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিএম তালেব হোসেনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য রাজি উদ্দিন আহম্মেদ রাজু, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরু, মো. দেলোয়ার হোসেন, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মেহের আফরোজ চুমকি, শামসুন নাহার চাপা, মো. সিদ্দিকুর রহমান, হাবিবুর রহমান সিরাজ, অ্যাডভোকেট এবি এম রিয়াজুল কবীর কাউসার, অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম, লে. কর্নেল (অব.) মো. নজরুল ইসলাম হিরু, ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপ, জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন, তামান্না নুসরাত বুবলী, আব্দুল মতিন ভূঁইয়াসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘ সাত বছর পর হওয়া জেলা সম্মলেন শনিবার সকাল থেকে নেতাকর্মীরা উপস্থিত হন নানা সাজ-পোশাক ও ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে। জেলাজুড়ে ছিল উৎসবের আমেজ।
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে নতুন কমিটির ঘোষণা দেন সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে জিএম তালেব হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পীরজাদা মোহাম্মদ আলীর নাম ঘোষণা করা হয়।