মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলে সীমান্ত শূন্যরেখায় এক রোহিঙ্গা নিহতের পর শনিবার সকালেও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে দফায় দফায় বিকট গোলার শব্দ শোনা গেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলম দুপুর ১টার দিকে নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘শুক্রবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তে গোলাগুলি, মর্টার শেল বিস্ফোরণের পর শনিবার সকালেও গোলার বিকট শব্দ শোনা গেছে। সকাল সাড়ে ৭টার পর থেকে থেমে থেমে কয়েকটি গোলার শব্দ পাওয়া গেছে।’
এদিকে আতঙ্কে সীমান্তঘেঁষা ঘুমধুম ইউনিয়নের উত্তরপাড়া ও কোনাপাড়া এলাকার ৩৫টি পরিবার অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে- এমন খবর শোনা গেলেও তা নিশ্চিত করতে পারেননি কেউ।
এসব বিষয়ে জানতে কক্সবাজার-৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদি হোসাইন কবিরকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ধরেননি।
প্রায় এক মাস ধরে নাইক্ষ্যংছড়ির তমব্রু সীমান্তে উত্তেজনা চলছে। সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার থেকে মর্টার শেল, গোলাগুলিসহ নানা ভারী অস্ত্রের আওয়াজে এপারের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তমব্রু ও বাইশপারী এলাকার মানুষ দিন কাটাচ্ছে আতঙ্কে।
বেশ কয়েকবার মিয়ানমার রাখাইন রাজ্যের পাহাড় থেকে ছোড়া মর্টার শেল বাংলাদেশের ভূখণ্ডেও এসে পড়েছে।
সবশেষ শুক্রবার রাতে তমব্রুর কোনারপাড়া সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ছোড়া মর্টার শেলে শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক যুবক নিহত হন। আহত হন রোহিঙ্গা শিশুসহ ৫ জন।
এর আগে একই দিন দুপুরে এই সীমান্তেই হেডম্যানপাড়ার ৩৫ নম্বর পিলারের ৩০০ মিটার মিয়ানমার সীমান্তের অভ্যন্তরে মাইন বিস্ফোরণে আহত হন বাংলাদেশি এক যুবক।
তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলম।
গত ২৮ আগস্ট তমব্রু উত্তরপাড়ায় একটি অবিস্ফোরিত মর্টার শেল এসে পড়ে। সেদিনই সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান চক্কর দিতে দেখা যায়।
এরপর ৩ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের দুটি যুদ্ধবিমান ও ফাইটিং হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া দুটি গোলা ঘুমধুম ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় পড়ে। সেগুলো অবিস্ফোরিত থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এর তিন দিন পর ফের ওই সীমান্তে ভারী অস্ত্রের বিকট শব্দ ভেসে আসে।