বাড়িতে কেউ থাকে না, ফলে বিদ্যুৎ ব্যবহারও হয় না। অথচ সেই বাড়ির এক মাসে বিদ্যুৎ বিল এসেছে প্রায় ১১ লাখ টাকা। পল্লী বিদ্যুৎ বিলের এমন ভূতুড়ে কাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাড়ির মালিক।
ঘটনাটি ঘটেছে পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এ। তাদের আওতাধীন চাটমোহর পৌর শহরের জিরো পয়েন্ট এলাকার শ্রী অধীর কুমার সরকারের নামের এক ব্যক্তির মিটারেই এমন বিল এসেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিটারটিতে গত আগস্টে বিদ্যুৎ ব্যয় হয়েছে ৯০ হাজার ১৫০ ইউনিট। আর এর বিল হিসাবে মালিককে ধরিয়ে দেয়া হয়েছে ১০ লাখ ৮২ হাজার ৬১ টাকা বিদ্যুৎ বিলের কাগজ।
অবশ্য পল্লী বিদ্যুৎ বলছে, তাদের কর্মীর ভুলে এমন ঘটনায় বাড়িওয়ালার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে।
বিলটি প্রস্তুত করেছেন পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ-১ এর কর্মী আসমা। সেখানে রয়েছে অর্থ বিভাগের এজিএমের স্বাক্ষর। বিলটি ১৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হাতে পেয়েছেন অধীর কুমার সরকারের বাড়ির লোকজন।
ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, গত ৬ মাসে পরিবারের কোনো সদস্যই থাকেন না বাড়িতে। অথচ এমন ভৌতিক বিল আসায় কাণ্ডজ্ঞানহীন বলে মন্তব্য করেন তারা।
এমন ভৌতিক বিলের ঘটনা পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ অফিসের নতুন কোনো কাজ নয় বলে জানান এলাকাবাসী। কারও নজরদারি না থাকায় এমন ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন নিরব ভূমিকায় রয়েছেন।
এ ছাড়া অদক্ষ অপারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ বিল তৈরির ফলে বিলের কপিতে নাম, পিতার নাম, মোবাইল নম্বর ভুলে ভরা থাকে। মিটার রিডিং না করে অফিসে বসেই বিদ্যুৎ বিল তৈরি করেন। এজিএম অর্থ এই বিল ক্রসচেক করার স্বাক্ষর থাকলেও তিনি কিছুই করেন না। মিটারে কম বিদ্যুৎ ব্যবহার দেখিয়ে বছর শেষে হাতিয়ে নেয়া হয় অতিরিক্ত টাকা। ফলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৩ লাখ গ্রাহক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
এ দিকে সমিতির ভুক্তোভোগী সদস্যরা অসন্তোষ প্রকাশ করে সমিতির অদক্ষ লোকবল আর কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতার কারণ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তারা।
এ ব্যাপারে বিল প্রস্তুতকারী আসমা খাতুন তার ভুল স্বীকার করে বলেন, ‘কাজ করতে গেলে একটু ভুল হতেই পারে। মানুষই ভুল করে। পরে সঠিকভাবে বিল প্রস্তুত করব।’
পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার মো. আকমল হোসেন বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানার পরেই বিল প্রস্তুতকারীকে শোকজ করেছি। যে গ্রাহকের বিলে এমন হয়েছে সেই গ্রাহকের নিকট আমি অফিসার পাঠিয়েছিলাম বিল সংশোধন করে দিব বলে। মানুষের তো ভুল হতেই পারে।’