সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতায় প্রেয়সী বরুণার জন্য বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে ১০৮টি নীলপদ্ম খুঁজে এনেছিলেন তার প্রেমিক। বগুড়ার কবি নিখিল নওশাদকে সেই পরীক্ষা দিতে না হলেও সংগ্রহ করতে হয়েছে প্রেমিকার পছন্দের ১০১টি বই।
এই বইগুলোর দেনমোহরেই ঘর বাঁধলেন নিখিল-শান্তনা। বগুড়ার ধুনটের গোসাইবাড়ীতে শুক্রবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ব্যতিক্রম এ বিয়েটি।
বর নিখিল নওশাদের বাড়ি গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের সাতরাস্তা গ্রামে। এক দশক ধরে কবিতা লিখছেন তিনি। সম্পাদনা করেন ‘বিরোধ’ নামে একটি ছোট কাগজেরও। পাশাপাশি বেসরকারি একটি কোম্পানির বিক্রয় কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত।
আর কনে শান্তনা খাতুন উপজেলার সোনাতলার কামালেরপাড়া গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের মেয়ে। তিনি উত্তর চেলোপাড়া দাখিল মাদ্রাসার ইংরেজির শিক্ষক। তার প্রিয় তালিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, হাসান আজিজুল হক, সৈয়দ মুজতবা আলী ছাড়াও দুই বাংলার জনপ্রিয় ও বিদেশি লেখকের বইও আছে।
বরের বাবা শামসুল ইসলাম বলেন, ‘গোসাইবাড়ীর কাজি আব্দুল হান্নানের অফিসে বিয়েটির কাবিন হয়েছে। আর ঘরোয়া পরিবেশেই বিয়েটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নিখিল ১০১টি বই দেনমোহর হিসেবে পুত্রবধূকে দিয়েছে। এই বইগুলোর মোট আর্থিক মূল্য ২ লাখ ২ হাজার টাকা।’
বর নিখিলের সঙ্গে আলাপে জানা যায়, কবিতার সূত্র ধরেই ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী শান্তনার সঙ্গে তার পরিচয়। পরিচয় থেকে ভাবের আদান-প্রদান। অবশেষে তা রূপ নিল দাম্পত্যে।
বিয়ের আগে দেনমোহর হিসেবে ১০১টি বই দাবি করেছিলেন শান্তনা
নিখিল বলেন, ‘দাম্পত্য জীবন শুরুর আগে শান্তনার শর্ত ছিল- সোনাদানা নয়, বিয়ের দেনমোহর হিসেবে তাকে দিতে হবে ১০১টি প্রিয় বই। সেই প্রিয় বইয়ের তালিকাও দিয়েছেন।’
তাই বিয়ের আগের দিন বগুড়া শহরের লেখক-সাহিত্যপ্রেমীদের আড্ডা ও প্রিয় স্থান পড়ুয়া লাইব্রেরিতে যান নিখিল-শান্তনা। সেখান থেকে সংগ্রহ করা হয় শান্তনার পছন্দের বইগুলো। এই লাইব্রেরির মালিকের দেয়া একটি ফেসবুক পোস্টের সূত্র ধরেই জানাজানি হয় বিষয়টি।
শান্তনা জানান, বিয়ের পর একটি পারিবারিক গ্রন্থাগার গড়ার স্বপ্ন তাদের। সেখানে দেনমোহর হিসেবে পাওয়া প্রিয় ১০১টি বই সাজিয়ে রাখবেন তিনি।