সিরাজগঞ্জ-পাবনা রেলপথের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত রেলব্রিজ ও বেশ কিছু কালভার্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে পাবনার ভাঙ্গুড়ার রাউজান এলাকার ২৫ নম্বর রেলব্রিজে ফাটল কিছুটা বেশি হওয়ায় ঝুঁকিতে রয়েছেন যাত্রীরা।
অবশ্য রেলওয়ে বলছে, তারা সংস্কারকাজ অব্যাহত রেখেছে। এখন ঝুঁকি কেটে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভাঙ্গুড়ার ২৫ নম্বর রেলব্রিজ দিয়ে দিনে ৪২টি ট্রেন যাতায়াত করে। যার ২১টি ট্রেন ঢাকার দিকে এবং ২১টি ট্রেন উত্তর ও দক্ষিণে যায়। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এসব রেলব্রিজ ও কালভার্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। পুরোনো এসব ব্রিজ-কালভার্ট সংস্কার করেই চলে ট্রেন চলাচল।
বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঈশ্বরদী রেলপথের ২৫ নম্বর রেলসেতুটি প্রায় ১২০ বছর আগে তৈরি। চলনবিলের একটি শাখা নদীর ওপর নির্মিত সেতুটির বেশির ভাগ পিলার এখন ভঙ্গুর। অনেক পিলারের ইট সরে গিয়ে গর্তও তৈরি হয়েছে।
রেলসেতুটিতে ঝুঁকি এড়াতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ লাল পতাকা টানিয়ে দিয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় হাজার হাজার মানুষকে ঝুঁকি নিয়েই চলতে হয় এ পথে। প্রত্যন্ত বিল অঞ্চলে মাঝেমধ্যেই সেতুর দুই পারে ট্রেন দাঁড় করানো হয়।
রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা সিল্কসিটি ট্রেনের যাত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘ভাঙ্গুড়ার রাউজান এলাকায় একটি ব্রিজের পাশে প্রায়ই ট্রেন দাঁড় করানো হয় ফাটলের কারণে। তারপর খুব ধীরগতিতে পারাপার হয়। আমরা ভয়ে থাকি, কখন কী হয় বলা তো যায় না। তাই ব্রিজ সংস্কার করা প্রয়োজন।’
সিরাজগঞ্জ রেলওয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আহসানুর রহমান বলেন, ‘২৫ নম্বর ব্রিজের সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। তবে ট্রেন পড়ে যাওয়ার মতো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় নেই। সংস্কারকাজের জন্য ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
‘মূলত শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্যই ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এখানে দুর্ঘটনা ঘটার কোনো আশঙ্কা নেই। সব কিছু ভালোই আছে। বন্যার মৌসুম শেষ হলে এখানে পুরো সংস্কারকাজ শুরু হবে।’সিরাজগঞ্জ রেলওয়ের থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির মৃধা বলেন, ‘প্রত্যেকটি ট্রেন ২৫ নম্বর পিলারের কাছে এসে ১-২ মিনিট স্লো করে। স্লো করার কারণে ব্রিজের কাছে রাতে টহল পুলিশের ব্যবস্থা করেছি।’বাংলাদেশ রেলওয়ের (পশ্চিমাঞ্চল) বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ বীরবল মণ্ডল বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি আমাদের নজরদারিতে আছে। তবে এখন যে পর্যায়ে এসেছে, তা আর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় নেই। বন্যার পানির কারণে সংস্কারকাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। পানি কমলেই কাজ শুরু হবে।’