বর্তমান সরকারের শাসনামলের চেয়ে পাকিস্তান আমলেও অনেক ভালো ছিলেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার দাবি, দেশের মানুষের অবস্থা এখন দিনকে দিন আরও খারাপ হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়িতে বৃহস্পতিবার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘পাকিস্তান সরকার থেকে বর্তমান সরকার আরও নিকৃষ্ট। আমরা পাকিস্তান আমলে আর্থিক ও জীবনযাত্রার দিক থেকে এর থেকে ভালো ছিলাম।
‘তার পরও পাকিস্তান সরকার যেহেতু আমার অধিকার ও সম্পদ হরণ করত, সে কারণে আমরা যুদ্ধ করেছি। কিন্তু এখন তার থেকেও খারাপ অবস্থায় আমরা আছি।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘এখন দেশে ১ লাখ ৯২ হাজার কোটিপতি আছে। এখানে গরিব মানুষের অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে।’
দেশের ৪২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘এমন দেশকে কীভাবে উন্নয়নশীল দেশ বলা যায়?’
দেশে সুশাসন নেই দাবি করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘এখন সুশাসন কী করে থাকবে? সরকারি কর্মকর্তা, এখনকার এমপি, চেয়ারম্যান কে কী করছে তার কোনো হিসাব নেই, জবাদিহিতা নেই। তারা যা খুশি তা করছে। মেগা প্রকল্পে ১০ হাজার কোটি টাকার ব্যয় ৪০ হাজার কোটি টাকা হচ্ছে।’
দেশে গণতন্ত্র নেই দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের মূল বক্তব্যটা হচ্ছে আমরা আমাদের সেই গণতন্ত্রকে ফিরে পেতে চাই, যার জন্য আমরা একাত্তরে যুদ্ধ করেছিলাম, বাহাত্তরে সংবিধান তৈরি হয়েছিল। পরবর্তীতে স্বৈরাচারী এরশাদকে সরিয়ে আবার সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছিলাম।’
সরকার দেশে মুক্ত সাংবাদিকতা ধ্বংস করে দিয়েছে বলেও মনে করেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘তারা বিভিন্ন আইন দিয়ে সাংবাদিকদের সত্য কথা বলা এবং লেখায় বাধা তৈরি করেছে। সাংবাদিক হত্যা, নির্যাতন এসব এখন অহরহ হচ্ছে, যার কারণে কেউ সাহস করে আর সত্য লিখছে না।’
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিএনপি ভোটে যাবে না বলে আগের ঘোষণা আবার তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে ভোট হলে বিএনপি ও অন্য দলগুলো বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে। এবার আমরা অপরিবর্তনীয় সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, এই সরকারের অধীনে আমরা কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না, একটি নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না।’
ঠাকুরগাঁও বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীনসহ জেলা বিএনপির নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।