বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বৃষ্টিতে বেহাল ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক

  •    
  • ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ২১:৫৯

চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নিয়ে টঙ্গীর সড়ক পরিস্থিতি পরিদর্শনে আসেন বিআরটি এর প্রকল্প পরিচালক (সেতু) মহিরুল ইসলাম খান। তবে পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তিনি।

বিআরটি প্রকল্পের ধীরগতির নির্মাণকাজের কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ছোট বড় গর্ত। এর মধ্যে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে গত দুই দিনের বৃষ্টিতে এসব গর্ত এখন পানিতে পরিপূর্ণ।

পানি থাকায় গর্তের গভীরতা বুঝতে না পেরে সড়কের বিভিন্ন অংশে উল্টে যাচ্ছে যানবাহন। এতে যান চলাচলে দেখা দিয়েছে ধীরগতি। ভোগান্তিতে পড়েন এই মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকরা।

বুধবার দেখা গেছে, গাজীপুরের বড়বাড়ি থেকে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট সৃষ্টি হওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে পুরো টঙ্গী এলাকা। ১০-১৫ মিনিটের পথ যেতে সময় লাগছে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা।

রাজধানীর নিকটবর্তী শিল্পনগরী গাজীপুরবাসীর অভিযোগ, বিআরটি প্রকল্পের নির্মাণকাজের কারণে বেশ কয়েক বছর ধরে তারা দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন। মহাসড়কের টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন জায়গায় চলছে বিআরটি এর ফ্লাইওভারের পিলার, স্টেশন, সড়ক ও ড্রেনের নির্মাণকাজ।

টানা বৃষ্টিতে সড়কের ওই অংশে অসংখ্য গর্ত পানিতে ডুবে থাকায় উভয় লেনে যান চলাচল ব্যহত হয়। বিকল্প সড়ক না থাকায় যানবহনের সারি বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দীর্ঘ হয়। যানজটে আটকা পড়ে অনেকে হেঁটে গন্তব্যে রওনা হন।

মহাসড়কের উভয়পাশের ফুটপাত না থাকায় জলাবদ্ধতার কারণে বাধ্য হয়ে পথচারীরা সড়কের মাঝখান দিয়ে চলাচল করেন। তবে কাঁদাপানিতে পায়ে হাঁটার পথেও ভোগান্তিতে পড়েন তারা।

ভুক্তভোগীদের মধ্যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আব্দুল মান্নান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘চান্দনা চৌরাস্তা থেকে সকাল ৮টায় রওনা হয়ে দুপুর ১২টায় আব্দুল্লাহপুর আসতে পেরেছি। অথচ এই পথটুকু যেতে মাত্র ৩০ মিনিট সময় লাগার কথা। কিছু পথ পায়ে হেঁটে আর কিছু পথ গাড়িতে এসেছি। অফিস সময় তো পেরিয়ে গেছে। চাকরিটা আছে নাকি চলে গেছে সেটা নিয়েই দুঃশ্চিতায় আছি।’

ধীরগতির বিআরটি প্রকল্পের সমালোচনা করে পথচারী মাজেদুল হক বলেন, ‘উন্নয়নের দীর্ঘমেয়াদের কারণে সড়কের এই বেহাল অবস্থা। সড়কের উন্নয়নের পাশাপাশি বিকল্প সড়কের ব্যবস্থা করা উচিত ছিল কর্তৃপক্ষের।’

টঙ্গী ব্রিজের উত্তর পাশে বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় সকাল থেকেই ধীরগতিতে যানবাহন প্রবেশ করে রাজধানীতে। সেখানে গর্তে উল্টে পড়ে বেশ কয়েকটি পণ্য বোঝাই রিকশা, ভ্যান ও সিএনজি। এর ফলে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন।

উত্তরা হাইস্কুলের শিক্ষার্থী লামিয়া বলেন, ‘সকালে স্কুলে যাওয়ার সময় হেঁটে যেতে হয়েছে। কাঁদাপানি মাড়িয়ে যাওয়ায় নোংরা ইউনিফর্মেই ক্লাস করতে হয়েছে। এখন বাসায় ফেরার পথেও যানজট। বাধ্য হয়ে আবারও হেঁটে বাড়ি ফিরছি। প্রায় প্রতিদিনই যানজটের কবলে পড়ে দেরিতে স্কুলে পৌঁছাতে হচ্ছে।’

পরিবহন চালক খোরশেদ মিয়া বলেন, ‘আগে ১২ কিলোমিটার মহাসড়কেই খানাখন্দ ও গর্ত ছিল। কিন্তু এখন টঙ্গীতে সড়কের অবস্থা ভয়াবহ খারাপ। এই ভোগান্তির অবসান কবে হবে তা কেউ বলতে পারেন?’

এদিকে, মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্ট খানাখন্দ ও গর্তে বালু ও রাস্তার পুরনো ঢালাই ফেলে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে ট্রাফিক পুলিশ। তবে বিভিন্ন জায়গায় গর্তে যানবাহন ফেঁসে যাওয়ায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় বেগ পোহাতে হচ্ছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক) আলমগীর হোসেন বলেন, ‘টঙ্গী ব্রিজ থেকে মিলগেট পর্যন্ত অনেকগুলো গর্ত হয়েছে। বৃষ্টি ও ভারি যানবাহন চলাচলের কারণে ছোট গর্তগুলো বড় হয়ে যাচ্ছে। ফলে ছোট পরিবহনগুলো গর্তে উল্টে পড়ে যাচ্ছে।’

আলমগীর হোসেন জানান, তাদের দুটি রেকার গাড়ি সার্বক্ষণিক কাজ করছে। তবুও গর্তে ফেঁসে যাওয়া গাড়ি সরাতে যে সময় লাগছে তাতেই যানজটের সারি দীর্ঘ হয়ে যাচ্ছে।

এ অবস্থায় বিআরটি কর্তৃপক্ষকে খানাখন্দ মেরামতের জন্য বলা হয়েছে। তারা রাত ১২টার মধ্যে সব খানাখন্দ ভরাট করার আশ্বাস দিয়েছেন।

এদিকে, বুধবার দুপুরে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নিয়ে টঙ্গীর সড়ক পরিস্থিতি পরিদর্শনে আসেন বিআরটি এর প্রকল্প পরিচালক (সেতু) মহিরুল ইসলাম খান। তবে পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর