জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার ৬৭তম জন্মদিন ১৩ সেপ্টেম্বর। ১৯৫৫ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কাছে ‘ছোট আপা’ হিসেবেই পরিচিত শেখ রেহানা। তার জন্মদিনে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা জার্মানিতে থাকায় সে সময় প্রাণে বেঁচে যান। সেখান থেকে ভারতে চলে যান দুই বোন। পরে শেখ রেহানা পরিবার নিয়ে যুক্তরাজ্যে চলে যান। রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার পর থেকে সেখানেই বসবাস করছেন তিনি।
শেখ রেহানার তিন ছেলে-মেয়ের মধ্যে রয়েছেন— ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, বড় মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ও ছোট মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী। স্বামী অধ্যাপক ড. শফিক আহমেদ সিদ্দিক।
বড় মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টির একজন এমপি। ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত এবং আওয়ামী লীগের গবেষণা সংস্থা সিআরআই-এর প্রধান। আর সবার ছোট আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী লন্ডনে ‘কন্ট্রোল রিস্কস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের গ্লোবাল রিস্ক অ্যানালাইসিস সম্পাদক।
শেখ রেহানার জন্মদিনে দেয়া বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মম হত্যাকাণ্ডে খুনি ঘাতক চক্রের হাতে পরিবারের সব সদস্যকে হারানোর পর বেদনার মহাসমুদ্র বুকে ধারণ করে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দুই বোন ছিলেন একে অপরের শেষ অবলম্বন। দুঃখ-কষ্ট ভাগাভাগি করে দুই বোন কাটিয়েছেন নির্বাসিত ও দুর্বিষহ প্রবাস জীবন।
‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর শেখ হাসিনার নির্দেশনায় মানব ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম সেই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রথম প্রতিবাদ গড়ে তোলেন শেখ রেহানা।’
প্রগতিশীল সমাজ ব্যবস্থা বিনির্মাণ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রামসহ প্রতিটি সংকটে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ দলের অন্য রাজনীতিকদের অনুপ্রেরণা জোগানোর পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে শেখ রেহানা পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু এবং জাতির পিতা হওয়ার পেছনে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের যেমন ভূমিকা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হওয়ার পেছনেও শেখ রেহানার অনুরূপ ভূমিকা রয়েছে।
‘দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে নীরবে-নিভৃতে ভূমিকা রেখে চলেছেন প্রচারবিমুখ জাতির পিতার কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা। এমনকি তিনি তার নামে বরাদ্দকৃত ধানমন্ডির বাড়িটিও দেশের প্রয়োজনে দান করে দিয়েছেন। বাঙালির প্রতি তার অসীম মমতা ও ভালোবাসা। সততার অনুকরণীয় আদর্শ।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘লন্ডনের মতো শহরে গণপরিবহনে যাতায়াত করেন। এমনকি আরেক বাঙালি পরিবারের সঙ্গে বাসা ভাগাভাগি করে বাস করেছেন। তারপরও জাতির পিতার নীতি ও আদর্শ থেকে কখনো বিচ্যুত হননি। ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা সত্ত্বেও একজন নিরহংকারী সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপনের বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা।
‘ধৈর্য্য, সততা, সাহস, দৃঢ়তা, অধ্যবসায়, নিষ্ঠা, উদারতা ও সংযমের অপূর্ব সমন্বয়ে গঠিত এক মানবিক চরিত্রের নাম শেখ রেহানা।’