চালের বাজারে কারসাজি রোধে মিলগেট ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের দৈনিক দাম ঘোষণার জন্য ওয়েবসাইট খুলতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
সচিবালয়ের মঙ্গলবার গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) সংলাপে এসে এ তথ্য জানান খাদ্যমন্ত্রী।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কয়েকদিন আগে মিল মালিকদের এক সম্মেলনে আমি সতর্ক করেছি। তারা এখনও বলে যে, মিলগেটে দাম বাড়ায়নি। তাদের বলা হয়েছে, তারা যেন মিল গেটের ওয়েবসাইট খোলে। প্রতিদিন এখানে কোন চালের দাম কত এটা তারা দেয়।
‘এখানে আহ্বান জানাব পাইকারি ব্যবসায়ী যারা আছে তারাও যেন ওয়েবসাইট খোলে। তারা মিলগেটের সাথে মিল রেখে জানাবে পাইকারি বাজার আজ কী আছে। তাহলে আমরা সামঞ্জস্য আনতে পারব। আমি মনে করি এটা অতি জরুরি। সমন্বয় করতে পারলে ভোক্তারা অনেক উপকৃত হবে।’
তিনি বলেন, ‘অনেকগুলো পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। এর আগেও ব্যাখ্যা আমি আপনাদের দিয়েছি। তেলের দাম যখন বাড়ল, সে হিসেবে যদি আমরা দেখি, চালের দাম খুব বেশি হলে জায়গা বিশেষে ১ টাকা বাড়তে পারে সর্বোচ্চ, সেখানে রাতারাতি ৫ টাকা ৬ টাকা ৮ টাকা যখন বাড়িয়ে দিল, এটা অস্থির মস্তিস্কের পরিচয় দেয়।
‘পরের দিন আমি ডিজি, সচিবকে ডেকে সেদিনই সিদ্ধান্ত নেই ১ সেপ্টেম্বর থেকে ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব চালু করব। ঘোষণার পর গ্যাপ ছিল ১৫ দিন। এর অর্থ হলো, ব্যবসায়ীদের কাছে বার্তা দেয়া যে ডাবল, তিন ডাবল আমাদের মজুদ থেকে আমরা দেব। এতে যদি কিছুটা স্টেবল হয়। এ কার্যক্রম এখন চালু আছে।’
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র জানান, ১ অক্টোবর থেকে ওএমএস কার্যক্রমের আওতায় আটার বিক্রি বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আজও মিটিং করেছি যে, গম আসছে, গমের সমস্যা হবে না। আমরা ১ অক্টোবর থেকে জেলা ও সিটি করপোরেশনে যেখানে আমরা আটা দিতাম। এখন তো লিমিটেড চার শ ডিলারের কাছে আটা যায়, ৫০০ কেজি করে। বাকিদের দিতে পারি না। ১ অক্টোবর থেকে সব ডিলারকে আমরা ১ টন করে আটা দেয়া শুরু করব, যাতে মানুষ আটা পায়।
‘এই আটাটা প্যাকেটজাত করা যায় কিনা ২ কেজি করে। কারণ খোলা আটা অনেক সময় স্মাগলিং হয়ে যায়, বাজারে দামের ডিফারেন্সটা যেহেতু বেশি। আমাদের তো লোভের সীমা নাই। এ কারণে আমরা প্যাকেটজাত করে বিক্রি করতে পারি কিনা। এতে দাম একটু বেশি পড়বে কিন্তু তারপরেও বাজারের চেয়ে অর্ধেক দাম পড়বে। আমি মনে করি এতে কালোবাজারি বন্ধ হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে এখনও যে খাদ্য মজুদ আছে তাতে হাহাকারের অবস্থা নেই। তবুও আমরা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছি। কারণ সামনে না জানি বন্যা হয় কিনা, বা খরায় যদি ফসলের ক্ষতি হয় এ জন্য আগাম সতর্কতা হিসেবে চাল-গম আমদানি করে আমরা আমাদের গুদাম থেকে যা বেরিয়ে যাচ্ছে, সেটা যেন পরিপূর্ণ করতে পারি। আশা করি সফল হব।
‘আমাদের দেশের প্রকৃতি যেমন অস্থির, ব্যবসায়ীরাও অস্থির। দেশে চালের পর্যাপ্ত মজুত আছে। ভারতে যখন ২০ শতাংশ ট্যাক্স আরোপ করল, সেটা সব চালে নয়, আতপ চালে। এটা দেখে দাম বাড়ানো শুরু করেছে। এ মুহূর্তে আউশের যে উৎপাদন, আমি গত ১০-২০ বছরে এমন উৎপাদন দেখিনি। সে জায়গা থেকে দাম বাড়া, আমি মনে করি অনুচিত।’