আধুনিক দাসত্ব সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে আরব দেশগুলোতে। এরপরই রয়েছে ইউরোপের অবস্থান।
জাতিসংঘের শ্রমবিষয়ক সংস্থা আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ কোটি মানুষ জোরপূর্বক শ্রম বা বিয়ের মধ্যে দিয়ে আধুনিক দাসত্বের বলি হচ্ছেন।
১৯ শতকের শেষ দিকে ধারণা করা হয়েছিল দাসপ্রথা পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে, তবে বাস্তবে তা হয়নি। পুঁজিবাদী ও নয়া উদারবাদ বিশ্বব্যবস্থার আড়ালে দাসপ্রথা আবারও ফিরে এসেছে নানান রূপে। এখন আফ্রিকাসহ বিভিন্ন অনুন্নত অঞ্চল থেকে জাহাজ ভরে মানুষ আনা না হলেও উন্নত বিশ্বে বসবাসে করেও নানাভাবে দাসের মতোই নিপীড়িত-নিগৃহীত হচ্ছেন অনেকে।
বাংলাদেশের অভিবাসীদের অধিকাংশ মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত। কেবল সৌদি আরবেই অভিবাসীদের ৮০ শতাংশ বা ২০ লাখ কর্মরত রয়েছেন। আরব দেশগুলোতে অভিবাসীদের অধিকাংশের কাজ এবং থাকার পরিবেশ অনেক ক্ষেত্রেই অনিরাপদ।
ইতিহাসবিদদের ধারনা ১৯ শতকে আরব দেশগুলোতে ৮ থেকে ১২ লাখ দাস আনা হয়েছিল। স্ক্যাচিং: সংগৃহীত
আইএলওর প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আরব দেশগুলোতে প্রতি দুই হাজারে প্রায় ১১ জন জোরপূর্বকভাবে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত। ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ায় দেশগুলোতে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ জনে। সারা বিশ্বে এর গড় প্রায় ৭ জন।
ব্যক্তিপর্যায়ে নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে এমন নিষ্পেষণের শিকার সর্বোচ্চ ৮৪ শতাংশ। অন্যদিকে সরকারি পর্যায়ে নিযুক্তদের ১৪ শতাংশ এর আওতায় পড়েন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আধুনিক এই দাসপ্রথা সামাজিক ন্যায়বিচার এবং টেকসই উন্নয়নের সম্পূর্ণ বিপরীত।’
আইএলওর প্রকাশ করা নতুন এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সারা বিশ্বে আধুনিক দাসত্বের কবলে আটকা পড়া মানুষের সংখ্যা এখন প্রায় পাঁচ কোটি।
শ্রমবিষয়ক সংস্থা আইএলওর গবেষণায় দেখা গেছে, গত বছরের প্রত্যেক দিনে বিশ্বের ২ কোটি ৭৬ লাখ মানুষ জোরপূর্বকভাবে বিভিন্ন কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। আর জোরপূর্বক বিয়ের পর বাধ্য হয়ে সংসার করছেন ২ কোটি ২০ লাখ।