২০১৯ সালে কাউন্সিলের মাধ্যমে নির্বাচিত হন সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই তাদের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল কেন্দ্র থেকে। তবে নির্ধারিত তিন বছর মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেননি এই চার নেতা।
এতে হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে সংগঠনটির পদপ্রত্যাশী নেতাদের মধ্যে। এতে সিলেটে যুবলীগে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের।
নিজেদের অধীন ১৩টি উপজেলা ও ৫টি পৌরসভার সব কটি ইউনিটে এখনও কমিটি দিতে পারেনি জেলা যুবলীগ। এখন পর্যন্ত ৮টি উপজেলা ও একটি পৌরসভায় কমিটি করা হয়েছে। অন্যদিকে মহানগর যুবলীগ ২৭ ওয়ার্ডে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেছে। তবে নবগঠিত ওয়ার্ডগুলোতে কমিটি হয়নি।
দুই কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা চার নেতা বলছেন, করোনার দীর্ঘ ধাক্কা ও বন্যার কারণে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে বিলম্ব হয়েছে। বছরখানেক আগেই ১০১ সদস্যের দুটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে জমা দেয়া হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র থেকে এখনও অনুমোদন দেয়া হয়নি।
প্রায় দেড় দশক পর ২০১৯ সালে সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগের সম্মেলন হয়। এর আগে সর্বশেষ সম্মেলন হয় ২০০৩ সালে। তবে ওই বছর কমিটি হয় সমঝোতার ভিত্তিতে। কাউন্সিলের ভোট হয় তারও আগে ১৯৯২ সালে।
এর ২৭ বছর পর ২০১৯ সালে কাউন্সিলের ভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এতে আশাবাদী হয়েছিলেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। তবে এখন আশার ছিটেফোঁটাও আর অবশিষ্ট নেই।
তিন বছর আগে ২৭ জুলাই মহানগর ও ২৯ জুলাই জেলা যুবলীগের সম্মেলন হয়। যুবলীগের তৎকালীন চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর উপস্থিতিতে এই সম্মেলনে মহানগর কমিটির সভাপতি পদে আলম খান মুক্তি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মুশফিক জায়গীরদার নির্বাচিত হন।
জেলা কমিটির সভাপতি হন ভিপি শামীম নামের পরিচিত শামীম আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক হন সীমান্তিক শামীম নামের পরিচিত শামীম আহমদ।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মিঠু তালকদার দীর্ঘদিন ধরে যুবলীগের রাজনীতিতে জড়িত। তিনি মহানগর যুবলীগের পদপ্রত্যাশী। তবে মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়ায় ক্ষোভ তার কণ্ঠে।
মিঠু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সংগঠন পরিচালনায় পুরোপুরি ব্যর্থ। তিন বছরেও তারা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেননি। সব ওয়ার্ডে কমিটি দেয়নি। তাদের জন্য সিলেটে যুবলীগই স্থবির হয়ে পড়েছে।’
মিঠুর অভিযোগ, এই দুই নেতা আগে আহ্বায়ক কমিটিরও নেতৃত্বে ছিলেন। তিন মাসের জন্য আহ্বায়ক কমিটির দায়িত্ব নিয়ে তারা ৫ বছর কাটিয়ে দিয়েছিলেন। তারা সংগঠনের জন্য নয়, নিজেদের লাভের জন্য রাজনীতি করেন।
জেলা যুবলীগে পদপ্রত্যাশী এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমান দায়িত্বশীলদের কমিটির ব্যাপারে প্রশ্ন করলেই তারা করোনা ও বন্যার অজুহাত দেন। অথচ এসব দুর্যোগের সময় তো কমিটি গঠন করা আরও জরুরি ছিল, যাতে সবাই মিলে দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায়।’
কেন্দ্রীয় নেতারাও যুবলীগের সিলেটের নেতৃত্বের প্রতি সন্তুষ্ট না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ কারণে তারা অনেক আগে পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দিলেও কেন্দ্র তা অনুমোদন করছে না। কারণ তাদের নেতৃত্বে কারও আস্থা নেই। তারা ব্যর্থ ও অযোগ্য।’
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি বলেন, ‘আমাদের মেয়াদের প্রায় দুই বছর করোনা ছিল। এ সময় সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ ছিল। তাই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা যায়নি। তবে করোনার প্রকোপ কমার পরই আমরা ১০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে জমা দিয়েছি। এটি এখন অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।’
একই তথ্য জানিয়ে সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চলতি মাসেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্র থেকে অনুমোদন পেতে পারে।’