চট্টগ্রামের পটিয়ায় সাবেক আওয়ামী লীগ নেতাকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় হাইদগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে বদরুদ্দিন মোহাম্মদ জসীমকে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব এ কে এম মিজানুর রহমান সোমবার রাতে নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রোববার প্রজ্ঞাপন জারি করে জসীমকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়।
এ ঘটনায় জেল খেটে গত বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান জসীম। বরখাস্তের বিষয়টি ফেসবুকে দেখেছেন জানিয়ে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি ফেসবুকে বরখাস্তের কথা দেখেছি। কিন্তু প্রজ্ঞাপনের বিষয়ে বিস্তারিত জানি না। আগামীকাল চট্টগ্রামে স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব।’
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পটিয়া থানায় হওয়া নির্যাতনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে গেছেন চেয়ারম্যান জসীম। তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করায় জেলা প্রশাসক তাকে বরখাস্তের সুপারিশ করেছেন।
গত ২৯ এপ্রিল ইফতার মাহফিলের ব্যানারে নাম না থাকা ও দাওয়াত না দেয়ার জেরে হাইদগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জিতেন কান্তি গুহকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধরের অভিযোগ ওঠে।
জিতেন নিউজবাংলাকে সে সময় বলেন, ‘ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে আমাকে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়। মাহফিলে সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী প্রধান অতিথি ছিলেন।
‘বিকেল ৩টার দিকে সবার সামনেই ইউপি চেয়ারম্যান বদরুদ্দিন মোহাম্মদ জসীম, সাবেক ইউপি সদস্য ইন্দ্রজিৎ চৌধুরী লিও, মো. সাকিব, ফাহিম মিলে কমিউনিটি সেন্টারে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে টেনেহিঁচড়ে বাইরে এনে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে। এতে আমার হাত ভেঙে যায়।’
- আরও পড়ুন: সাবেক আ.লীগ নেতাকে গাছে বেঁধে মারধর
অভিযোগের বিষয়ে জসীম সে সময় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মানুষের জায়গা দখলকারী জিতেন গুহের ওপর লোকজন আগে থেকেই ক্ষিপ্ত। ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশে তাকে মারধর করেছে।
‘আমার অনুসারী নয়, সাধারণ মানুষই মেরেছে। দাওয়াত বা ব্যানারে নাম না থাকা কোনো ইস্যু নয়।’
ঘটনার পর জিতেনের ভাই তাপস কান্তি গুহ সাতজনকে আসামি করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও চার থেকে পাঁচজনের বিরুদ্ধে পটিয়া থানায় মামলা করেন। পরদিনই জসীম ও তার ছেলে মুশফিক উদ্দিন ওয়াসিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালত থেকে তারা জামিনে মুক্তি পান।
এরই মধ্যে আদালত মামলার বিচারকাজ শুরুর আদেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা পটিয়া থানার উপপরিদর্শক সঞ্জয় দে।