লক্ষ্মীপুরে অনুমতি না নিয়েই দুই স্কুলের মাঠে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান করেছে ছাত্রলীগ। এতে শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বৃষ্টিতে ভিজে স্কুলে ঢুকে ফের বাড়ি ফিরে গেছে শিক্ষার্থীরা।
সোমবার সকাল ১০টার দিকে জেলা শহরের মধ্য বাঞ্চানগর এন আহম্মদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও লক্ষ্মীপুর বালিকা বিদ্যানিকেতন মাঠে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
স্কুলের মাঠে জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিকে সংবর্ধনা দেয় সদর উপজেলা ও লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ শাখা।
স্থানীয়রা জানান, সকালে বৃষ্টিতে ভিজে বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীরা দেখে তাদের মাঠজুড়ে মঞ্চ। মাঠে ঘোরাফেরা করছে শত শত মানুষ। শুরু হয় মাইকের বিকট শব্দ। একপর্যায়ে পাঠদান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন শিক্ষকরা।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, অনুষ্ঠানের বিষয়ে তাদের আগে জানানো হয়নি।
অনুমতি না নিয়ে স্কুলে পাঠদান বন্ধ রেখে সংবর্ধনার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, জেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম রকি, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাদাত হোসেন ভূইয়াসহ নেতাদের সংবর্ধনা বেলা ১১টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল। অনুষ্ঠানটি শুরু হয় বেলা পৌনে ২টায়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ঘিরে সকাল ৯টা থেকে বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী বিদ্যালয় মাঠে সমবেত হন।
প্রধান অতিথিসহ সংবর্ধিত অতিথিদের বরণ করতে লক্ষ্মীপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কে ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান নেন নেতাকর্মীরা। এতে আটকা পড়ে অনেক যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী গাড়ি। এ সময় ড্রোন উড়তে দেখা যায় অনুষ্ঠানস্থলে।
লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান। ছবি: নিউজবাংলা
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান।
সদর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি তারেক মাহমুদ এতে সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন।
লক্ষ্মীপুর বালিকা বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক আলমগীর আলম বলেন, ‘মাঠে সমাবেশ হলে আমাদের আগে জানানো হতো। এবারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান সম্পর্কে আমাদের কেউ কিছু জানায়নি। সকালে বৃষ্টিতে ভিজে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসার পর ২ ঘণ্টা পাঠদান হয়েছে। এরপর মাইকের আওয়াজে আর ক্লাস করা সম্ভব হয়নি। বাধ্য হয়ে সবাইকে ছুটি দেয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম রকি ও সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাদাত হোসেন ভূইয়ার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।