বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দিনাজপুর সীমান্তে কিশোর হত্যায় ‘বিএসএফ নয়’

  •    
  • ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৭:৩০

শুরুতে ধারণা করা হয়েছিল, বিএসএফের গুলিতে মারা গেছে কিশোর মিনার হোসেন বাবু। তবে তার মা এই ঘটনায় থানায় যে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন, তাতে আসামি করা হয়েছে বাংলাদেশের কয়েকজন যুবককে। বলা হয়েছে, আসামিরা সবাই পেশাদার মাদক ও সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। পরিকল্পিতভাবে তার ছেলে মিনার বাবুকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে আসামি সুমন বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে সীমান্তে যায়। পরে তারা মিনার বাবুকে অতর্কিতভাবে আঘাত করে গুরুতর জখম করে এবং বুকে গুলি করে হত্যা করে মরদেহ সীমান্তের ৩১৫ নম্বর পিলারের কাছে ফেলে রেখে যায়।

দিনাজপুরের দাইনুর সীমান্তে বাংলাদেশির মৃত্যুর পর ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের দিকে আঙুল উঠলেও এই ঘটনায় প্রাণ হারানো কিশোরের মা যে মামলা করেছেন, তাতে আসামি করা হয়েছে বাংলাদেশের কয়েকজনকে।

মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, পেশাদার মাদক ও সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্যরা তার ছেলেকে হত্যা করেছে।

গত বুধবার মধ্যরাতে দিনাজপুর সদর উপজেলার দাইনুর সীমান্তের ৩১৫ নম্বর মেইন পিলারের কাছে মারা যায় ১৬ বছর বয়সী মিনার হোসেন বাবু। তার মরদেহ বিএসএফের সদস্যরা নিয়ে যাওয়ার পর অভিযোগ ওঠে তাদের গুলিতেই মারা গেছে মিনার।

এর মধ্যে শনিবার মিনারের মা মিনারা পারভীন দিনাজপুর কোতোয়ালি থানায় যে অভিযোগ করেন, তাতে আসামি করা হয়েছে সদরের খানপুর পাতপাড়া গ্রামের সুমন হোসেন, খানপুর খুদিহার এলাকার এন্তাজুল হক ও সাগর, খানপুর ফকিরপাড়া এলাকার আতাউর রহমান ও মোসলেম বাহারের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

এজাহারে বলা হয়, আসামিরা সবাই পেশাদার মাদক ও সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। পরিকল্পিতভাবে তার ছেলে মিনার বাবুকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে আসামি সুমন বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে সীমান্তে যায়। পরে তারা মিনার বাবুকে অতর্কিতভাবে আঘাত করে গুরুতর জখম করে এবং বুকে গুলি করে হত্যা করে মরদেহ সীমান্তের ৩১৫ নম্বর পিলারের কাছে ফেলে রেখে যায়।

মিনার বাবুর মা উল্লেখ করেন, পরের দিন লোকমুখে শুনতে পান যে তার ছেলের মরদেহ সীমান্তে পড়ে রয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত আসামিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান তিনি।

দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বলেন, ‘মিনারের মা থানায় একটি অভিযোগ করেছেন। মরদেহ দেশে আসার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মরদেহ শনাক্ত হলেও ফেরত আসেনি মরদেহ

বিএসএফ মিনারের মরদেহ নিয়ে যাওয়ার দুই দিন পর তার পরিচয় শনাক্তে পরিবারের পক্ষ থেকে সব নথিপত্র দেয়া হয়। এরপর পেরিয়ে গেছে আরও দুই দিন। তবু মরদেহ ফেরত দেয়নি বিএসএফ।

মিনার খানপুর ভিতরপাড়ার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে ছিল। খানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করত সে।

মিনারের বাবা জাহাঙ্গীর আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার ছেলের মরদেহ কখন ফেরত পাব তা এখন পর্যন্ত জানি না। তারা তো পরিচয় ও শরীরের দাগ শনাক্তের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ ও প্রমাণ দিতে বলেছে। আমরা বিজিবির কাছে তাও দিয়েছি।

‘কিন্তু কী কারণে এত দেরি করা হচ্ছে, তা বুঝতে পারছি না। সন্তান হারিয়ে আমার স্ত্রী এমনিতেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাই আমি সরকার ও বিজিবির কাছে অনুরোধ করব, আমার ছেলের মরদেহ যত দ্রুত সম্ভব ফেরত দেয়া হোক।’

আস্করপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্য রুমানা পারভীন নিউজবাংলাকে জানান, সেদিন মরদেহ নিয়ে যাওয়ার পর পরিচয় শনাক্তে বিজিবির কাছে তথ্য চায় বিএসএফ। পরে শুক্রবার বিকেলে তিনিসহ বিজিবির খানপুর সীমান্ত ফাঁড়িতে গিয়ে মিনারের ছবিসহ কিছু কাগজপত্র দিয়ে আসেন আস্করপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু বকর ছিদ্দিক এবং নিহতের বাবা জাহাঙ্গীর আলমসহ কয়েকজন। যাবতীয় তথ্য ই-মেইলের মাধ্যমে বিএসএফের কাছে পাঠায় বিজিবি।

বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক

চার দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর দাইনুর সীমান্তে মরদেহ ফেরত নিয়ে বিজিবি ও বিএসএফের পতাকা বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে বিএসএফ মরদেহ হস্তান্তরের আশ্বাস দিয়েছে।

সদর উপজেলার দাইনুর সীমান্তের ৩১৪ নম্বর মেইন পিলারের ৭ নম্বর সাব-পিলারের কাছে সোমবার সকাল ১০টায় এই বৈঠকে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকর্তারা ছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

মরদেহ হস্তান্তরের বিষয়ে জানতে চাইলে দাইনুর বিজিবি সীমান্ত ফাঁড়ির বিওপি কমান্ডার আক্তার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

তবে বৈঠকে অংশ নেয়া আস্করপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাজেদুর রহমান বলেন, ‘বিকেল ৪টার পর মরদেহ হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর