চারদিনের ভারত সফরের বিস্তারিত জানাতে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আগামী বুধবার বিকেল ৪টায় গণমাধ্যমকর্মীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং। তবে সংবাদ সম্মেলনটি কোথায় হবে সেটি এখনও জানানো হয়নি। বলা হয়েছে, ভ্যেনু চূড়ান্ত হলে তা জানিয়ে দেয়া হয়।
সোমবার বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সংবাদ সম্মেলনে সরাসরি উপস্থিত থাকবেন সরকারপ্রধান।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী যত সংবাদ সম্মেলন করেন, তার বেশিরভাগই হয়েছে তার বাসভবন গণভবনে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও কয়েকটি সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
শেখ হাসিনা বিদেশ সফর করলে বরাবর এই সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন। এতে সফরের বিষয়ে একটি লিখিত বিবৃতি দেন। পরে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাব দেন। সেই প্রশ্নোত্তর পর্বে সাধারণত রাজনৈতিক বিষয়গুলোই প্রাধান্য পায়।
তবে ভারত সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনগুলো একটু ব্যতিক্রম হয় এই কারণে যে, প্রশ্নগুলো সাধারণত সফর নিয়েই থাকে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারত সব সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আওয়ামী লীগবিরোধীরা বরাবর অভিযোগ করে আসছে যে, ক্ষমতাসীনরা ভারতের প্রতি দুর্বল এবং তারা জোরালভাবে দাবি তুলে ধরতে পারে না।
বিপরীতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, ভারতের কাছ থেকে যা কিছু আদায় করতে পেরেছে তার সবই করেছে আওয়ামী লীগ। বিরোধীরা কথার মালা ছাড়া কিছুই করতে পারে না।
এর আগে শেখ হাসিনা যতবার ভারত সফর করেছেন, ততবার দেশটির সঙ্গে চুক্তি ও সমঝোতার বিষয়ে খুঁটিনাটি সংবাদ সম্মেলন থেকেই জানা গেছে।
গত সোম থেকে বৃহস্পতিবার চার দিনের সফরে প্রতিবেশী দেশটিতে যান শেখ হাসিনা। সফরের দ্বিতীয় দিন নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউজে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে সাতটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।
এতে কুশিয়ারা নদীর ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহারসহ দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী উভয় দেশের নেয়া বেশ কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন। এর মধ্যে আছে খুলনার রামপালে ১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক মৈত্রী পাওয়ার প্লান্ট ইউনিট-১।
পরে যৌথ বিবৃতিতে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদারে দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
এই সফরে বাংলাদেশের সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি সই হয়নি। তবে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বিনা মাশুলে ট্রানজিট সুবিধা পেয়েছে বাংলাদেশ যাকে সফরের বড় প্রাপ্তি হিসেবে তুলে ধরছে ক্ষমতাসীনরা।
বিএনপি অবশ্য দাবি করছে, এই সফর থেকে বাংলাদেশের অর্জন শূন্য। শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় আনতে ভারতকে অনুরোধের বিষয়ে সফরের আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের একটি উক্তি রাজনীতিতে যে তোলপাড় তুলেছে, সেই কথাটিও সরকারবিরোধীরা তুলে ধরছে। তারা দাবি করছে, প্রধানমন্ত্রীর সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতায় টিকে থাকা।
প্রধানমন্ত্রীর এই সংবাদ সম্মেলনে বিরোধীদের তোলা সব অভিযোগের জবাব আসতে পারে।