ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে অভিভাবকহারা হয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্যের মৃত্যুতে সোমবার দেয়া শোকবার্তায় এ কথা উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে জাতির এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো, আমরা একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদকে হারালাম এবং আমি হারালাম একজন সত্যিকার অভিভাবক।’
আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
শোকবার্তায় তিনি জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনি প্রচারণা চালানোর সময় থেকেই সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সঙ্গে পরিচয় হয় তার। তখন থেকেই আওয়ামী রাজনীতিতে আকৃষ্ট হন সাজেদা।
শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী আরও লেখেন, ‘তিনি ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগে যোগদান করে ছেষট্টির ছয় দফা আন্দোলন এবং ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানসহ সব আন্দোলন-সংগ্রামে অত্যন্ত গুরুত্বর্পূণ ভূমিকা রাখেন। তিনি সত্তরের নির্বাচনে সাতজন নারী গণপরিষদ সদস্যের একজন ছিলেন। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।’
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করার পর সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী জেল-জুলুম-নির্যাতন সহ্য করেও আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শোকবার্তায় বলেন, ‘১৯৮৬-১৯৯২ পর্যন্ত পুনরায় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং পরে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মলেনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত করার ক্ষেত্রে সাজেদা চৌধুরীর ভূমকিা ছিল অপরিসীম।’
শোকবার্তায় বলা হয়, ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফেরার পর শেখ হাসিনা তাকে একজন অভিভাবক হিসেবে পেয়েছিলেন। সেই থেকে অসুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি সার্বক্ষণিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছায়াসঙ্গী হিসেবেই ছিলেন।
সাজেদার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।