বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রতিমা শিল্পী সংকটে ঝালকাঠি

  •    
  • ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১২:০২

তরুণ কুমার কর্মকার আরও বলেন, ‘আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়া বাজানোর পরেই পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ৩০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার মহাপঞ্চমী থেকে ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমী পর্যন্ত চলবে আনুষ্ঠানিকতা।’

প্রতি বছরই অনেকটা জমজমাট করে দক্ষিণের জেলা ঝালকাঠিতে পালন করা হয় শারদীয় দুর্গাপূজা। নানা আয়োজনে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা তাদের সবচেয়ে বড় উৎসবটি উদযাপন করেন। চলতি বছরও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না।

পূজাকে সামনে রেখে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা। এবার জেলায় ১৭১ মণ্ডপে হবে দুর্গাপূজা। তবে স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিমা তৈরির কারিগর কম থাকায় কাজের গতি অনেকটা ধীর। বাইরের জেলা থেকে কারিগর এনে কাজ করাচ্ছে অনেক মণ্ডপ কর্তৃপক্ষ।

কারিগর সংকটের কথা জানিয়ে স্থানীয় প্রতিমা শিল্পী মিলন পাল বলেন, 'একসময় শুধু পালবংশের লোকেরা ঠাকুর তৈরি করত। বর্তমান প্রজন্ম এ কাজে আসছে না। তারা যাচ্ছে অন্য পেশায়। এটি বছরের নির্ধারিত সময়ের কাজ। অন্য পেশায় প্রতি মাসেই আয় করা যায়। তা ছাড়া বাজারমূল্য অনুযায়ী মজুরি কম পাওয়ায় কারিগরদের এ কাজে এখন আর পোষাচ্ছে না।’

এ নিয়ে কথা হয় প্রতিমা তৈরির কারিগর উত্তম পালের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘২৭ বছর ধরে ঠাকুর তৈরির কাজ করছি। এবার ১২টি মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ পেয়েছি। বাড়িতেও পাঁচ সেট তৈরি করতেছি। সেগুলো কমদামে রেডিমেড বিক্রি করব। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কাজে সুবিধা পাচ্ছি। সময়মতো এসব প্রতিমা মণ্ডপ কমিটির কাছে হস্তান্তর করব।’

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তরুণ কুমার কর্মকার জানান, জেলায় এবার পূজা হবে ১৭১ মণ্ডপে। সদরের ৭৩, কাঁঠালিয়ায় ৫৫, রাজাপুরে ২২ ও নলছিটিতে ২১টি মণ্ডপে।

মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত বেশির ভাগ জায়গায় প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে। কিছু মণ্ডপে সবে কাজ শুরু করা হয়েছে। কারিগর সংকট থাকায় শহরের মন্দিরগুলোতে বেশ আগেভাগেই কাজ শুরু করা হয়েছে। চলতি মাসের শেষে রংতুলির আঁচড়ে প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে প্রতিমাগুলো।

হরিসভা রাধাগোবিন্দ মন্দিরের দুর্গামণ্ডপের প্রতিমা কারিগর পরাণ পাল বলেন, ‘বাপ-দাদার ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য এই পেশার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছি। কিন্তু আমার সন্তানরা অন্য পেশায় চলে গেছে। বর্তমানে জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় আমাদের আগের মতো পোষায় না। আমি এবার ১৭টি প্রতিমা বানানোর কাজ পেয়েছি।’

গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া থেকে ঝালকাঠি মদনমোহন আখড়াবাড়ী মণ্ডপে প্রতিমা তৈরি করতে আসা ভাস্কর শ্রীবাস গাইন বলেন, ‘দ্বিতীয় মাটির কাজ শেষ করেছি, এখন হাতে যা সময় আছে তাতে এ বছর নির্ধারিত সময়ের আগেই রং, পোশাক এবং অলংকার পরানোর কাজ শেষ করে পূজা কমিটির কাছে প্রতিমা বুঝিয়ে দিতে পারব।’

কোটালীপাড়া থেকে আসা প্রতিমা শিল্পী সৈকত বিশ্বাস বলেন, ‘ঝালকাঠিতে কাজ করতে এসে আমার আর্থিক জোগান দেয়া হচ্ছে। আমি বছরের এই সময়টায় প্রতিমা তৈরির কাজ করি। বাকি সময়ে সংগীত চর্চা করি।’

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের ঝালকাঠি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তরুণ কুমার কর্মকার বলেন, ‘দূর থেকে আসা কারিগরদের নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে পাহারার ব্যবস্থা করতে প্রতিটি মণ্ডপ কমিটির প্রধানদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশের মাধ্যমে এবারের শারদীয় উৎসবকে বর্ণিলভাবে পালন করার আশাবাদী তিনি।

তরুণ কুমার কর্মকার আরও বলেন, ‘আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়া বাজানোর পরই পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ৩০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার মহাপঞ্চমী থেকে ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমী পর্যন্ত চলবে আনুষ্ঠানিকতা।’

এবার দেবী দুর্গা গজে অর্থাৎ হাতির পিঠে চেপে আসবে বলে জানান তিনি। আর কৈলাসে মহাদেবের কাছে ফিরে যাবেন নৌকায়।

এ বিভাগের আরো খবর