তামাক সেবনে প্রতি বছর ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যান এবং তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায় দেশে প্রতি বছর ৩০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয় বলে ‘দি ইউনিয়ন’র এক গবেষণা উঠে এসেছে।
রোববার খুলনা সিটি করপোরেশনের মিলনায়তনে ‘স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নির্দেশিকা’ বিষয়ক বিভাগীয় কর্মশালায় এ তথ্যগুলো তুলে ধরা হয়।
কর্মশালায় বিষয়ভিত্তিক মূল গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দি ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন।
প্রবন্ধে বলা হয়, তামাকজাত পণ্য থেকে সরকার যে পরিমাণ রাজস্ব পায়, তামাক সেবনের কারণে অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসার জন্য সরকারের তার থেকে বেশি ব্যয় হয়।
তামাক বিক্রেতাদের তামাক বিক্রি বাড়ানোর জন্য প্রচার ও বিজ্ঞাপনে আইন লঙ্ঘন করা হয় বলেও উল্লেখ করা হয় প্রবন্ধে। বলা হয়, বিক্রেতারা শিশুদের কাছে তামাকজাত দ্রব্যও বিক্রি করে যা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের পরিপন্থি।
তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদনকারী/কোম্পানি ও বিক্রেতাকে লাইসেন্সের আওতায় এনে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিয়ন্ত্রণে আনা এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পালনে তামাক কোম্পানি ও বিক্রেতাদের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলেও মত দেয়া হয় প্রবন্ধে।
দি ইউনিয়ন-এর আর্থিক সহযোগিতায় খুলনা সিটি করপোরেশন, এইড ফাউন্ডেশন, সিয়াম ও বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।
খুলনা বিভাগের সকল জেলা সদর থেকে আসা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর মেয়র ও পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের সক্রিয় সংগঠনের সদস্যদের উপস্থিতিতে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
মেয়র বলেন, ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে এদেশের জনগণকে রক্ষার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগসহ সরকারের সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগ, বেসরকারি সংস্থা, মিডিয়া, সুশীল সমাজের প্রতিনিধির সমন্বিত কার্যকর অংশগ্রহণ প্রয়োজন। স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের বিধানসমূহ বাস্তবায়ন করা সম্ভব।’
খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব) লস্কার তাজুল ইসলাম-এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্ময়কারী হোসেন আলী খন্দকার।
কর্মশালা সঞ্চালনা করেন সিয়াম-খুলনার নির্বাহী পরিচালক মাসুম বিল্লাহ এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক সাগুপ্তা সুলতানা।