ঝিনাইদহ পৌরসভায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় নির্বাচন স্থগিতের তিন মাস পরের ভোটে নৌকার প্রার্থী আব্দুল খালেককে প্রত্যাখ্যান করেছেন ভোটাররা।
রোববার শান্তিপূর্ণ এই নির্বাচনে মেয়র পদে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল। তিনি নারিকেল গাছ মার্কা নিয়ে ভোট পেয়েছেন ২৫ হাজার ৭৫৩। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল খালেক পেয়েছেন ১৮ হাজার ৫৩৯ ভোট। ব্যবধান ৭ হাজার ২১৪ ভোট।
বিজয়ী জাদেহীও আওয়ামী লীগ সমর্থক হিসেবে পরিচিত। তিনি দলীয় মনোনয়ন চাননি। তবে তার পাশেও আওয়ামী লীগেরই একটি অংশ কাজ করেছে।
এই ভোট হওয়ার কথা ছিল গত ১৫ জুন। তবে নৌকার সমর্থকদের আচরণে ভোট স্থগিত হয়ে যায়। প্রচার চলাকালে গত ১৮ মে জাহেদী হিজলের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর এবং শহরের ধোপাঘাটা ব্রিজ এলাকায় প্রচারে হামলা করে বলে অভিযোগ ওঠে।
এ ঘটনায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাখ্যা চাওয়ার পর খালেক ক্ষমা চান। এর পরও তার সমর্থকরা প্রতিদ্বন্দ্বীদের ওপর হামলা চালায়।
নির্বাচনে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী
এরপর ২ জুন খালেকের প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। এর ছয় দিন পর হাইকোর্ট এই আদেশ এক মাসের জন্য স্থগিত করে। এই আদেশে জটিলতা তৈরির আশঙ্কায় নির্বাচনই স্থগিত করে দেয়া হয় ১২ জুন।
প্রায় তিন মাস পর আবার ভোটের তারিখ এলে ভোটের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নেয়া হয় বিশেষ ব্যবস্থা। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দেয়া হয়। সেই সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন ১৮ জন নির্বাহী ও ৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ৫ প্লাটুন বিজিবি, ৪৮০ জন পুলিশ ও ৪২৩ জন আনসার, ৯টি মোবাইল টিম ও র্যাবের ৩টি স্ট্রাইকিং ফোর্স।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল ছালেক জানান, ভোটে কোনো ধরনের গোলযোগ হয়নি। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ভোটাররা নির্বিঘ্নে তাদের প্রতিনিধি বাছাই করেন। সকাল থেকেই দিনভর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। এর মধ্যেও লাইনে দাঁড়ান ভোটাররা।
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে ৯ টি ওয়ার্ডের ৪৭ কেন্দ্রের ২৬৫ টি কক্ষে ভোট চলে সকাল আটটা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত।
সন্ধ্যার পর ঘোষিত হয় ফলাফল।
বিজয়ী প্রার্থী কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার ও আমার সমর্থকদের সঙ্গে যে ব্যবহার করা হয়েছিল, তার জবাব জনগণই দিয়েছে। আমি সবকিছু ভুলে পৌরসভার উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করতে চাই।’