নওগাঁর মহাদেবপুরে পল্লি চিকিৎসকের ভুল ইনজেশনে শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শিশুটির দাঁতের সমস্যা থাকায় ওই চিকিৎসকের কাছে নেয়া হয়েছিল বলে জানায় তার পরিবার।
উপজেলার হাতুর গ্রামে রোববার বেলা ১১টার দিকে মারা যায় চার বছরের সাব্বির রহমান। সে পত্নীতলা উপজেলার চান্দুইল গ্রামের ছানোয়ার হোসেনের ছেলে।
মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা খোরশেদুল ইসলাম শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ভুল চিকিৎসায় এমনটা হয়ে থাকতে পারে। আর মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, মৃত্যুর কারণ বের করতে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে।
শিশুর বাবা ছানোয়ার হোসেন বলেন, তার ছেলের দাঁতের ব্যথা ছিল। তাকে নিয়ে রোববার সকালে উপজেলার হাতুর গ্রামের আশা ডেন্টাল কিওর হোমের পল্লি চিকিৎসক প্রদীপ কুমার মণ্ডলের কাছে নেন। প্রদীপ জানান, শিশু সাব্বিরের একটি দাঁত তুলে ফেলতে হবে। সে জন্য দুটি ব্যথানাশক ইনজেকশন পুশ করতে হবে।
ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি এর আগে বেশ কয়েকবার পল্লি চিকিৎসক প্রদীপের কাছে ছেলের দাঁতের চিকিৎসার জন্য গেছি। কিন্তু দাঁতের ব্যথা ভালো না হওয়ায় আজ আবার গেছি। দুটি ইনজেকশন পুশ করে দাঁত তুলে ফেলার পর আমার ছেলে খিঁচুনি দিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। ওই চিকিৎসক তখনই দ্রুত পালিয়ে যায়।
‘ছেলেকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে নিলে সেখানকার ডাক্তার জানান অনেক আগেই আমার ছেলে মারা গেছে। আমার ছেলেকে ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলেছে ওই চিকিৎসক। সঠিক চিকিৎসা দিতে না পারলে তিনি বলতে পারতেন আমরা অন্য কোথায় গিয়ে চিকিৎসা করাতাম। ওই পল্লি চিকিৎসকের কঠিন শাস্তি চাই। আর যেন কোনো শিশুকে আমার ছেলের মতো ভুল চিকিৎসায় মরতে না হয়।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা খোরশেদুল ইসলাম বলেন, ‘শিশু সাব্বিরকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার আগেই মারা যায়। ভুল চিকিৎসার কারণে এমনটা হয়ে থাকতে পারে। কারণ পরিবারের সদস্যরা বলছেন, দুটি ইনজেকশন পুশ করা হয়েছিল।
‘হয়তো হাইপার সেনসিটিভ বা নিউরোজেনিক শকের কারণেও হতে পারে। সাব্বিরের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’
মহাদেবপুর থানার ওসি আজম উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘শিশুর বাবা থানায় মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন। ঘটনাটি আমরা তদন্ত করছি।’