নদীর পানিতে লোহার পাইপ, বাঁশ ও ড্রাম। আর তাতে যুক্ত জাল। এভাবে নদীর মধ্যে তৈরি করা হয়েছে ভাসমান খাঁচা। মেঘনার শাখা নদীগুলোতে এ রকম ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ করছেন চাষিরা। নদীর পানির প্রবাহও থাকছে, আবার মাছগুলোকে একটি আবদ্ধ জায়গায়ও আটকে রাখা যাচ্ছে।
নরসিংদী সদর উপজেলার করিমপুর ও আলোকবালি ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, নদীর বিভিন্ন ফাঁকা জায়গার পানিতে এভাবে খাঁচা বসানো হয়েছে। চাষ হচ্ছে নদীর মাছ। পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে।
কথা হয় মাছ চাষি মো. নুরু মিয়া, সামেদ মিয়াসহ করিমপুরের একাধিক চাষিদের সঙ্গে।
তারা নিউজবাংলাকে জানান, করিমপুর মেঘনা নদীঘাটের পাশে প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এভাবে মাছ চাষ চলছে। এক একটি খাঁচার একাধিক মালিক রয়েছে।
তেলাপিয়া, পাঙাশ, কই, শিং, মাগুর, রুই, চিংড়ি, সরপুঁটিসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করা হচ্ছে। নদীর প্রবাহে এসব মাছ অল্প সময়ে বড় হয়ে ওঠে। বাজারে এসব মাছের চাহিদাও ভালো।
মৎস্যজীবীরা ছোট পোনা কিনে খাঁচার মধ্যে লালন করার পাঁচ মাসের মধ্যে মাছ বিক্রির উপযুক্ত হয়। প্রতি খাঁচা থেকে ৪০০ থেকে ৫০০ কেজি মাছ পাওয়া যায়। অনেক বেকার যুবক এ মাছ চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
মাছ চাষের দেখভাল করেন মো. আমির আলী। তিনি নিউজবাংলাকে জানান, দিন দিন নদীগুলো নাব্যতাসংকটে পড়ছে। কমে যাচ্ছে পুকুর জলাশয়। নদীতে খাঁচায় মাছ চাষে তাই ঝুঁকছে অনেকে। এর চাহিদাও বাজারে ভালো।
মাছ চাষিদের অভিযোগ, শিল্প-কারখানার বর্জ্য এই জেলার ব্রহ্মপুত্র নদ ধরে বয়ে এসে এখন মেঘনা নদীর পানি দূষণ করছে। মাছের খাবারের দামও বেড়ে গেছে। পুঁজির অভাবে এই পদ্ধতিতে মাছ চাষে কিছুটা সমস্যা হয়। জেলা মৎস্য অফিস থেকেও নেয়া হয় না তেমন খোঁজখবর।
নরসিংদী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন নিউজবাংলাকে জানান, মেঘনা নদীজুড়ে প্রায় এক হাজারের ওপর খাঁচায় মাছ চাষ করেছেন ৪০ জন চাষি। সদর ছাড়াও পলাশ, রায়পুরা ও মনোহরদী উপজেলায় বেড়েছে এই চাষ।
তিনি বলেন, ‘করিমপুর ও রায়পুরা উপজেলায় নদীতে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষে সার্বিকভাবে আমাদের তদারকি আছে। আমরা মাছ চাষিদের প্রশিক্ষণ ও বিশেষ সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে তাদের সঠিক পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে আসছি।’