নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের একটি বাড়ির পাঁচতলা থেকে স্বামী ও স্ত্রীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উপজেলার মিজমিজ সিআইখোলা এলাকার ওই বাড়ি থেকে শনিবার সন্ধ্যায় মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন রাজমিস্ত্রি রবিউল ইসলাম ও তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা।
রবিউল ইসলামের বাড়ি নীলফামারীতে। আয়শা সিদ্দিকার বাড়ি বান্দরবানে। তিনি গত ১৪ জুন লাকি দাশ থেকে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং নাম পরিবর্তন করে আয়শা সিদ্দিকা হন। নব দম্পতি হিসেবে ওই ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন তারা।
নিহতদের বাসা থেকে উদ্ধার করা একটি হলফনামার (এফিডেভিট) কাগজ থেকে এসব তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল আলম মরদেহ উদ্ধারের পর এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, ওই বাড়ির লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল যায়। সেখানে গিয়ে দেখে ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। পরে পুলিশ দরজা ভেঙে ভেতরে গিয়ে দেখে একটি কক্ষের মেঝেতে দুটি মরদেহ পড়ে আছে। পরে বাড়ির মালিক জানান তারা স্বামী ও স্ত্রী।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘মরদেহের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। দুটি মরদেহের মধ্যে পুরুষের রক্তাক্ত ও নারীর মুখ অর্ধগলিত অবস্থায় ছিল। আমরা এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছি।’
বাড়ির মালিক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘গত ১ আগস্ট ওই স্বামী ও স্ত্রী ঘর ভাড়া নেন। আজ বিকেলে বাসার অন্য ভাড়াটিয়ারা ওই বাসা থেকে গন্ধ পেয়ে আমাকে জানান। পরে পুলিশে খবর দিই।’
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, ‘মরদেহের সুরতাহালে নিহতদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন না পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, তারা আত্মহত্যা করেছে। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর বোঝা যাবে আত্মহত্যা না অন্য কিছু। তা ছাড়া মরদেহ দেখে মনে হয়েছে, সেগুলো দুই-তিন দিন আগের।’
ওসি বলেন, ‘সেখান থেকে চিরকুট পাওয়া ও রুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ পাওয়া গেছে। এ কারণে মনে হচ্ছে এটি আত্মহত্যা। তা ছাড়া ওই চিরকুটে পারিবারিক সমস্যা কারণও রয়েছে। এমনকি তাতে লেখা আছে তাদের লাশ যেন গ্রামে পাঠানো না হয়। ঢাকায় যেন লাশ দাফন করা হয়। তবুও পুরো বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ওই চিরকুটের লেখা রবিউলের কি না তা যাচাই-বাছাইসহ তদন্ত চলছে।’
নিহতরা নব দম্পতি হিসেবে ওই ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল আলম। তিনি বলেন, ‘রবিউল ইসলাম ও আয়েশা সিদ্দিকা সম্পর্কে জড়িয়ে বিয়ে করেন। এরপর সংসার শুরু করছিলেন। কিন্তু আয়েশা সিদ্দিকা এক সময় সনাতন ধর্মের ছিলেন ও তার ওই সংসারের একটি ছেলে রয়েছে। এ নিয়ে হয়তো কারও সঙ্গে তাদের মান-অভিমান চলছিল।’
ওই দম্পতির মরদেহের পাশ থেকে পাওয়া চিরকুট থেকে এমনি আভাস পাওয়া গেছে জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘তদন্ত শেষে আরও বিস্তারিত জানানো হবে।’