বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আপনারা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক বানিয়েছেন, কে মানবে: ফখরুল

  •    
  • ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৫:৩৮

আমরা সবাই চাই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক হোক। তারা মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের সহায়তা করেছে। বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুপ্রতীম দেশ। আমরা একসঙ্গে কাজ করব, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আপনাদের সম্পর্ক এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছেন, মনে হচ্ছে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না। এটা কেউ মেনে নেবে না।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকার বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ককে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক বানিয়েছে। এটা কেউ মেনে নেবে না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যই ভারত সফর করেছেন বলেও মনে করেন বিএনপির এই নেতা। দাবি করেছেন, এ সফর থেকে বাংলাদেশ কিছুই পায়নি।

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বিএনপি নেতা। ‘রাজনীতি - পূর্ব পাকিস্তান ও বাংলাদেশ’ নামে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করতে সেখানে যান ফখরুল। বইটি লিখেছেন হারুন-অর রশিদ।

প্রধানমন্ত্রীর সদ্য ভারত সফর নিয়ে তিনি বলেন, ‘খুব কাছের রাষ্ট্র ভারতবর্ষে চলে গেছেন। যাতে আরাম করে থাকা যায়। কী পেয়েছেন? কিছুই না। যেখানে নিজের দেশের মানুষকে মারছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে তখন গুলি করে মারছেন। যে সময় দেশে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে, সে সময় আপনি জয়পুরে গিয়েছেন, যা এই দেশের মানুষ মেনে নিতে পারেনি।’

ফখরুল বলেন, ‘আমরা সবাই চাই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক হোক। তারা মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের সহায়তা করেছে। বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুপ্রতীম দেশ। আমরা একসঙ্গে কাজ করব, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আপনাদের সম্পর্ক এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছেন, মনে হচ্ছে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না। এটা কেউ মেনে নেবে না।…ভারত সীমান্তে আমাদের নাগরিককে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে।’

২০১৯ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কের গভীরতা বোঝাতে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের উপমা দিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ভারতীয় গণমাধ্যম আজকালকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘উভয় দেশের সম্পর্ক খুবই ভালো। অনেকটা স্বামী–স্ত্রীর সম্পর্কের মতো। টুকটাক মতানৈক্য থাকলেও মিটে যায়।’

ফখরুল বলেন, ‘আমরা ১৯৭১ সাল থেকে দেশকে একটা স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছি। একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে পারিনি। কোনো ব্যক্তিবিশেষকে বা দলকে দায়ী করতে চাই না। জাতি হিসেবে একটা স্থিতিশীল অর্থনৈতিক অবকাঠামো গড়ে তুলতে পারিনি। জাতি হিসেবে এটা আমাদের চরম ব্যর্থতা।’

মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭৩ সালে প্রথম সাধারণ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগও আনেন বিএনপি নেতা। সেই নির্বাচনে দৃশ্যত আওয়ামী লীগের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। তারা বিপুল ভোটে জেতে ১৯৭০ সালের মতোই।

ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচনে প্রশাসন ব্যবহার করে, ব্যালট বাক্স নিয়ে গিয়ে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করেছে। জোরপূর্বক জয়লাভ করেছে। তারা এমনিতেই বিপুল ভোটে জয়লাভ করত হয়তো। কিন্তু জবরদস্তি সেই ১৯৭৩ থেকেই শুরু। বাংলাদেশকে একটা স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে না দেয়ার চক্রান্ত, তখন থেকেই। অর্থাৎ বাংলাদেশ যেন একটি রাজনৈতিক এবং কাঠামো তৈরি করতে না পারে সেই চেষ্টা করেছে আওয়ামী লীগ।’

আওয়ামী লীগ কেন রক্ষীবাহিনী ও বাকশাল তৈরি করেছিল- তার জবাব দিতে পারবে না বলেও মনে করেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কোনো দিন সমাজতন্ত্র বিশ্বাসই করত না। অথচ সেই সমাজতন্ত্র করতে গিয়েছে তারা। তারা লুটপাটের রাজত্ব করছে।

'বেগুন গাছ লাগিয়ে কমলা আশা করলে তো হবে না। যে দেশে এখনও অনেক মানুষ দারিদ্যসীমার নিচে বাস করে, বিএ পাস করে বেকার হয়ে বসে আছে যুবকরা, ভ্যান চালাচ্ছে, রিকশা চালাচ্ছে, সে দেশকে তারা বলছে নাকি উন্নয়নের রোল মডেল। মানুষকে প্রতারণা করে, তাদের সঙ্গে বেইমানি করে তাদের সবকিছুতে ধ্বংস করে দিচ্ছে।’

যে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়, তার প্রশংসাও করেন ফখরুল। বলেন, ‘হারুন-অর রশিদ যে বইটি লিখেছেন, তাতে অনেকগুলো রেফারেন্স ব্যবহার করা হয়েছে, উদ্ধৃতি রয়েছে। আছে বলেই বইটি সমৃদ্ধ।

‘এখানে ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। ব্রিটিশ শাসনের অবস্থার কথা বলা হয়েছে। তারও পূর্বে মুঘল শাসনের যে ব্যবস্থা ছিল, তা তুলে ধরা হয়েছে। পুরো বইটি পড়া হয়নি। পরবর্তী সংস্করণে আরও রেফারেন্স, আরও উদ্ধৃতি দিয়ে করলে বইটি আরও সমৃদ্ধ হবে।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশে বই লেখা এবং সত্য কথা বলার চেষ্টা করা কঠিন। কারণ, এখন যারা জোর করে, মানুষের অধিকার খর্ব করে ক্ষমতায় আছে তারা চায় না সত্যিটা বেরিয়ে আসুক।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

এ বিভাগের আরো খবর