জন্মদিনের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা দিন মানুষের জীবনে আর কী আসতে পারে! সেই মানুষটা আবার যদি হন যুক্তরাজ্যের রানি? তাহলে তো কথাই নেই। বড় বড় সব আয়োজন, আভিজাত্যের ছোয়া সবকিছুতেই।
সদ্য প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ৯০তম জন্মদিনের আয়োজনে ২০১৬ সালের ২১ এপ্রিল সেই গৌরবময় উদযাপনের অংশীদার হয়েছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাদিয়া হোসেন। রানির মৃত্যুতে নতুন করে আলোচনায় এসেছে নাদিয়ার কেক প্রসঙ্গ।
রান্না-বিষয়ক বিবিসির জনপ্রিয় প্রতিযোগিতা ‘গ্রেট ব্রিটিশ বেক অফ’ শিরোপা জিতে ব্যাপক সাড়া ফেলা নাদিয়া রানির জন্য তৈরি করেছিলেন বিশেষ কেক। ওই কেকের ছবি তখন ছাপা হয় ব্রিটেনের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়।
বিবিসি জানায়, কমলার দই (অরেঞ্জ ক্রিম) দিয়ে তৈরি এই কেকে দেয়া হয় কমলা মাখনের প্রলেপ (অরেঞ্জ বাটারক্রিম)। এর স্বাদ-গন্ধ কিছুটা লেবুর মতো (সিটরাসি)। সোনালী, বেগুনী এবং ডোরাকাটা কেক রঙ বসেছিল সেই কেকে।
কীভাবে রানির জন্মদিনের কেক বানানোর আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন সে কথা নাদিয়া জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যম দ্য সানকে। তিনি বলেন, ‘আমি তখন বাংলাদেশে ছিলাম ভ্রমণ নিয়ে আমার একটা ডকুমেন্টারি বানানোর কাজে।
‘হঠাৎ একটি মেইল পাই। ভাবলাম এটা হয়তো কেউ মজা করে পাঠিয়েছে। পরে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর বাকিংহাম প্রাসাদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়।’
নাদিয়া তার বাড়িতে বসেই কেকটি বানান। তবে তা রানির কাছে পাঠান কুরিয়ারের মাধ্যমে।
কেক বানানোর অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, আমি রানির কেকের জন্য বিভিন্ন নকশা তৈরির চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু প্রথমে ঠিকভাবে পারছিলাম না। চারদিন সময় নিয়ে সেটি বানালাম।
দ্য রয়াল ফ্যামিলির টুইটার থেকেও রানির সে সময়ের কেক কাটার ভিডিও পোস্ট করা হয়। এতে রানির পাশে দেখা যায় নাদিয়াকে। কেকের কারিগর হিসেবে লেখা হয় নাদিয়ার নাম।
লন্ডনের কাছে ‘উইন্ডসর ক্যাসল’-র গিল্ড হলে রানি এলিজাবেথের ওই জন্মদিনের অনুষ্ঠানে অংশ নেন নাদিয়াও। এ সময় বেশ চাপ অনুভব করছিলেন তিনি।
নাদিয়া বলেন, কেকটা দেখে রানি এলিজাবেথ প্রশ্ন করেছিলেন, এর ভেতরে কি আছে? আমি জানাই, অরেঞ্জ ড্রিজল। রানি আবার জানতে চান, এটা কি কাটা যাবে?
তিনি বলেন, আমি বুঝলাম তিনি হয়তো ভয় পাচ্ছেন যে কেকটা কাটা যাবে না। আমি বললাম, হ্যাঁ এটা কাটা যাবে।
যুক্তরাজ্যের অন্যতম বৃহত্তম লুটনে শহরে জন্ম নেয়া নাদিয়া হোসেন এখন স্বামী ও তিন সন্তানকে নিয়ে থাকেন মিলটনকিনস শহরে। সিলেটের বিয়ানীবাজারের মোহাম্মদপুর গ্রামে তার বাবার বাড়ি।