কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় অভিনব কৌশলে অন্তত ৪০টি বাল্যবিয়ে করানোর অভিযোগ উঠেছে আখতার হোসেন নামে এক কাজির বিরুদ্ধে। একটি বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে গিয়ে এই তথ্য উদ্ঘাটন করেছেন উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আল মাহমুদ হোসেন।
কাজি অফিসে গিয়ে মাহমুদ আবিষ্কার করেন, ২০২৩ সালে বিয়ের বয়স হবে এমন অন্তত ৪০ কনের বিয়ে ইতোমধ্যেই করিয়ে ফেলেছেন অভিযুক্ত কাজি। আর এটা করেছেন তিনি এক অভিনব ফাঁকির মধ্য দিয়ে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের আলী চানের অপ্রাপ্তবয়স্ক কন্যার সঙ্গে কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার ছৈয়দ আলমের ছেলের বিয়ে হচ্ছে বলে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে জানান এক ব্যক্তি। পরে উখিয়ার ইউএনও ইমরান হোসাইন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আল মাহমুদ হোসেন ও উপজেলা শিশুবিষয়ক সমাজকর্মী অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলামকে বিয়েটি প্রতিরোধের নির্দেশ দেন।
এ ছাড়া হলদিয়াপালংয়ের ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরীকেও একই নির্দেশ দেন ইউএনও। এ অবস্থায় অপ্রাপ্তবয়স্ক ওই কনেকে নিয়ে যাওয়ার সময় গ্রাম পুলিশের সহায়তায় বিয়ের গাড়িটি থামান ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী। পরে তিনি গাড়িটি উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেনের হাতে তুলে দেন।
এ সময় কনে দাবি করেন, বয়স না হলেও তার বিয়েটি নিবন্ধন করা হয়েছে।
বিষয়টির সত্যতা জানতে সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন ইউপি চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে কাজি অফিসে গেলে চাঞ্চল্যকর আরও তথ্য বেরিয়ে আসে।
কাজি আকতার হোসেন অপ্রাপ্তবয়স্কদের বিয়ে নিবন্ধন করাতে ২০২৩ সালের আলাদা বই ব্যবহার করছিলেন। ওই বইয়ের সর্বশেষ নিবন্ধন হয়েছে ৪০ নম্বর পাতায়!
সেই পাতায় কোহিনূর আক্তার মনি নামে একজনের বিয়ে নিবন্ধন করা হয়, যার বয়স ১৮ হবে ২০২৩ সালে।
এভাবে ৪০টি বাল্যবিয়ের প্রমাণ পাওয়ায় কাজি আখতার হোসাইনকে প্রমাণসহ ইউএনওর কাছে নিয়ে যান মাহমুদ হোসেন।
এ বিষয়ে মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘কাজি অফিস থেকে উদ্ধার করা ৪০টি নিকাহনামায় সময় উল্লেখ করা আছে ২০২৩ সাল। অথচ বিয়েগুলো সম্পন্ন হয়ে গেছে অনেক আগেই এবং তারা সংসারও করছেন। সবগুলো বিয়েই বাল্যবিয়ে।’
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, ‘কাজিকে জরিমানা করা হয়নি। তবে বিয়েটি বন্ধ রাখা হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’