সারের দাবিতে কৃষকদের বিক্ষোভে অংশ নেয়াকে সরকারবিরোধী অবস্থান উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের জামালপুরের একটি ওয়ার্ড শাখার সাধারণ সম্পাদককে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। কেন তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, আগামী সাত দিনের মধ্যে তার ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়েছে।
সদর উপজেলার তুলশীরচর ইউনিয়নে গত বুধবার ওই কর্মসূচি পালিত হয়েছিল। দুদিন পর শুক্রবার বিকেলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক শামীম ইয়াজদানী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কৃত নেতার নাম সাইদুর রহমান। তিনি উপজেলার তুলশীরচর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাইদুর রহমান গত বুধবার তুলশীরচর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের গাড়ামারা গ্রামের সড়কে সারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনে কিছু ‘অসাধু ব্যক্তি’কে সঙ্গে নিয়ে সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছিলেন। এই কর্মকাণ্ডের জন্য সাংবাদিকদের ডেকে এনে সাইদুর রহমান সরকারবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন।
একই সঙ্গে তিনি এসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) প্রচার করেছেন।
দায়িত্বশীল পদে থেকে সাইদুরের ‘সংগঠন ও সরকারবিরোধী’ পদক্ষেপ নিয়ে দায়িত্বের অমর্যাদা করছেন বলেও উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।দল থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে সাইদুরের বক্তব্য পায়নি নিউজবাংলা। তিনি ফোন বন্ধ করে রেখেছেন।
সারের দাবিতে মানববন্ধন কীভাবে সরকারবিরোধী কর্মসূচি হয়- এমন প্রশ্নে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম ইয়াজদানী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সে মানববন্ধন করছে, আবার মিডিয়াকে আনছে। আর মানববন্ধনে সরকারের বিপক্ষে কথা বলছে। এসব কাজে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে। তাই তাকে আপাতত সাময়িক বহিষ্কার করা হয়ছে।
‘কেন তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, সে বিষয়ে উপযুক্ত কারণসহ আগামী সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে। তিনি যথাযথ কারণ দেখাতে পারলে তাকে বহিষ্কার করা হবে না।’
সারের দাবিতে মানববন্ধন কীভাবে সংগঠনবিরোধী হয়- এমন প্রশ্নের উত্তরে তুলশীরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম ইয়াজদানী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তিনি মানববন্ধন করছেন, আবার মিডিয়া ডাইকে আনছেন। আর মানববন্ধনে সরকারের বিপক্ষে কথা বলছেন। এসব কাজে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে। তাই তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।’
গঠনতন্ত্রের কোন ধারায় তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে, এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারেনি তিনি।
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানির পাশাপাশি সার আমদানিতেও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। পাশাপাশি গ্যাস সংকটের কারণে দেশেও দুটি কারখানায় বন্ধ রাখতে হয়েছে উৎপাদন।
এসব কারণে কৃষকরা চাহিদামতো সার পাচ্ছেন না, আওয়ামী লীগের শাসনামলে যে বিষয়টি এর আগে কখনও দেখা যায়নি। বরং ১৯৯৪ সালে বিএনপি শাসনামলে সারের দাবিতে আন্দোলনকারী কৃষকদের পুলিশ গুলি করে হত্যার বিষয়টি এখনও বলে থাকেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
সার নিয়ে সংকটের মধ্যে দেশের নানা প্রান্তে কৃষকরা বিক্ষোভ করছেন। তারা ডিলারদের বিরুদ্ধে অবৈধ মজুতের অভিযোগ করছেন। প্রশাসনের অভিযানে এর প্রমাণও মিলছে বিভিন্ন জেলায়।