বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নিম্নমানের কাজে ঠিকাদার বাতিল, চার বছর পর রাস্তার কাজ

  •    
  • ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৯:৪১

সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের আগের ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করার পর নতুন করে প্রাক্কলন তৈরি করে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আশা করি দ্রুতই কাজটি শুরু হবে।’

নিম্নমানের কাজের অভিযোগে কার্যাদেশ বাতিল করে দেয়া হয় মাঝপথে। অবশ্য তার আগেই কিছু টাকা উত্তোলন করে নিয়ে পালিয়ে যায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া জামালপুর-শেরপুর-বনগাঁও আঞ্চলিক মহাসড়কের পুনর্নির্মাণের সেই কাজ এখনও শেষ হয়নি।

অবশ্য কাজটি কবে শেষ হবে সেটিও বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। এতে ভোগান্তির শেষ নেই জনগুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কে চলাচলকারীদের।

সড়কটির পুনর্নির্মাণ কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তৎকালীন সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হয়।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে, বাকি কাজ শেষ করতে ৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ করতে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দ্রুতই কাজ শেষ করা হবে।

সওজ জানায়, শেরপুরের নাকুগাঁও স্থলবন্দর, বারোমারি মিশনসহ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র ও দুই উপজেলার সংযোগ সড়ক এটি। ১৯৯১-৯২ সালে আঞ্চলিক মহাসড়ক হিসেবে কোরিয়ান প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৩২ দশমিক ৪০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের জামালপুর-শেরপুর-বনগাঁও সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছিল।

পরে দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় সড়কটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। ফলে সড়কটি পুনর্নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করে সওজ। ১৩০ কোটি টাকায় যৌথভাবে কাজটি পায় মেসার্স এসইপিএল প্রাইভেট লিমিটেড, ওটিবিএল ও মেসার্স তুর্ণা এন্টারপ্রাইজ নামে তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে সড়কটির পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্র অনুযায়ী সম্প্রসারণকাজ না করে নিম্নমানের কাজ করতে থাকে। কাজের মাঝপথে সেটি ধরা পড়লে ২০২০ সালে বন্ধ হয়ে যায় সড়কটির উন্নয়নকাজ। এতে দুর্ভোগ বেড়ে যায় মানুষের।

জানা গেছে, সওজের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে পুরো কাজ শেষ না করেই সিংহভাগ বা ৯০ কোটি টাকা উত্তোলন করে পালিয়ে যায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। নিম্নমানের কাজের অভিযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশ বাতিল করায় দুই বছর আগে বন্ধ হয়ে যায় পুনর্নির্মাণ কাজ। আর অনিয়মের অভিযোগে বদলি করা হয় সে সময়ের সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান উদ্দিন আহমেদকে।

দীর্ঘদিনেও কাজ শেষ না হওয়ায় জরাজীর্ণ এ সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে সাধারণ মানুষ ও যানবাহন। এতে বিভিন্ন সময় ঘটছে দুর্ঘটনা।

ঝিনাইগাতী উপজেলার তিনআনীর খলিল মিয়া বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়া কি আর চলাচলের কোনো পরিস্থিতি আছে। আমরা খুব রিস্ক নিয়া চলাচল করি। অনেক দিন থেকে কাজটা বন্ধ। আমরা চাই দ্রুত সমস্যা সমাধান হোক।’

তিনআনীর বাজারের ব্যবসায়ী নুরল আমিন বলেন, ‘তিন-চার বছর পরও রাস্তাটার কাজ পুরাপুরি শেষ হয় নাই। আমাদের দোকানের জন্য মাল কিনতে শেরপুর শহরে যেতে হয় এই রাস্তা দিয়ে, খুব কষ্ট করে যাতায়াত করতে হয়।’

আব্দুল করিম, রহিম মিয়া, রহমত আলী, জসিম মিয়ার মতো অনেক গাড়িচালক জানান, রাস্তা ভাঙাচোরার কারণে গাড়ি নষ্ট হয় তাড়াতাড়ি। যাতায়াতেও সময় বেশি লাগে। মাঝে মাঝে গাড়ি উল্টে যায়। কোয়ারি রোড থেকে টেংরাখালী পর্যন্ত অনেক বেশি ভাঙাচোরা। তার পরও এমনিই পড়ে আছে চার বছর থেকে। গাড়ি চলাচলে খুবই অসুবিধা।’

তারা দ্রুত সড়কটির সংস্কারকাজ শেষ করার দাবি জানান।

এ ব্যাপারে শেরপুর সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের আগের ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করার পর নতুন করে প্রাক্কলন তৈরি করে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আশা করি দ্রুতই কাজটি শুরু হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জামালপুর-শেরপুর-বনগাঁও সড়কটি খুবই জনগুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। অবশিষ্ট কাজ শেষ করতে ৩৮ কোটি টাকার মতো ব্যয় হতে পারে।’

এ বিভাগের আরো খবর