বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. আকবর আলি খানের জানাজা হয়েছে।
ঢাকার গুলশান আজাদ মসজিদে শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে তার জানাজা হয়।
পরে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় এ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মানের আয়োজন করা হয়।
রাষ্ট্রীয় মর্যাদার আনুষ্ঠানিকতা শেষে মরদেহ তোলা হয় লাশবাহী গাড়িতে। তখন কিছু সময়ের জন্য আকবর আলি খানকে শেষবারের মতো দেখার সুযোগ দেয়া হয় পরিবারের সদস্য, অসংখ্য ভক্ত ও গুণগ্রাহীদের।
পরে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মিরপুরের দিকে। আকবর আলি খানের ভাই কবির উদ্দিন খান বলেন, মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
জানাজায় শরিক হন সর্বস্তরের মানুষ। ওই সময় উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘আকবর আলি খান কঠিন পরিশ্রমটা করেছেন বাংলাদেশকে তুলে ধরার জন্য। জাতির একটা বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল, বিশেষ করে এই সময়ে, জাতি যখন অশনিসংকেত…সত্য কথা বলার লোক নেই।’
জাফরুল্লাহ বলেন, ‘কয়েক দিন আগেও তিনি স্বাক্ষর করেছেন; বলেছেন ইভিএম করবেন না। জনগণের পক্ষে তিনি অবস্থান নিয়েছেন। সত্য বলতে তিনি ভয় পাননি।’
৭৮ বছর বয়সী আকবর আলি খান বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়ার পথে রাত ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
আকবর আলি খানের জন্ম ১৯৪৪ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন ইতিহাসে; কানাডার কুইন্স ইউনিভার্সিটিতে অর্থনীতিতে। তার পিএইচডি গবেষণাও অর্থনীতিতে।
সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে পেশাজীবনের প্রধান ধারার পাশাপাশি করেছেন শিক্ষকতাও। অবসর নিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে। এরপর দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন।
সাবেক অর্থসচিব আকবর আলি খান ২০০৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হন। দায়িত্ব পালনে প্রতিবন্ধকতার মুখে তিনি পদত্যাগ করেন।
অবসরের পর তার আবির্ভাব ঘটে পূর্ণকালীন লেখক হিসেবে। অর্থনীতি, ইতিহাস, সমাজবিদ্যা, সাহিত্য- বিচিত্র বিষয়ে তার গবেষণামূলক বই পাঠকের কাছে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়।