চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইটটি রাত ৮টার পর পর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ সিনিয়র নেতারা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। মন্ত্রী পরিষদের সদস্য ও উর্দ্ধতন সরকারি কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৫টায় ভারতের জয়পুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সফরসঙ্গীদের নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন সরকারপ্রধান।
এসময় রাজস্থানের শিক্ষামন্ত্রী বিডি কাল্লা এবং ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।
বৃহস্পতিবার জয়পুর ছাড়ার আগে দেশটির রাজস্থানের আজমির শরীফে খাজা গরীবে নেওয়াজ হযরত মঈনুদ্দীন চিশতি (রহ.)-এর দরগা শরীফ জিয়ারত ও প্রার্থনার মাধ্যমে চার দিনের সফর শেষ করেন শেখ হাসিনা। সেখানে দেশের জনগণের জন্য দোয়া চান তিনি।
দিল্লিতে নিজামুদ্দিন আউলিয়ার পবিত্র মাজার জিয়ারতের মাধমে আনুষ্ঠানিক ভাবে ভারত সফর শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে সোমবার নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী।
সফরের প্রথম দিন বিকেলে নয়া দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শংকর।
সফরের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার হায়দরাবাদ হাউজে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এবং একান্ত বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠকের পর প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সাতটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। কুশিয়ারা নদীর ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহারসহ দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী উভয় দেশের নেয়া বেশ কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন। এর মধ্যে আছে খুলনার রামপালে ১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার কয়লা ভিত্তিক মৈত্রী পাওয়ার প্লান্ট ইউনিট-১।
পরে যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদারে দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। যৌথ বিবৃতিতে ভারত বাংলাদেশি যে কোনো পণ্য তৃতীয় কোন দেশে রপ্তানি করতে বিনা মাশুলে ট্রানজিট ব্যবহারে সুযোগ দেয়ার প্রস্তাব করে।
ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদি মুর্মু এবং উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখারের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন শেখ হাসিনা।
বুধবার শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন মন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি এবং নোবেল জয়ী কৈলাশ সত্যার্থীরও সাক্ষাৎ করেন। ওইদিন আইসিটি মৌর্য হোটেল কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
প্রধানমন্ত্রী ৭ সেপ্টেম্বর ভারতের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। একই দিনে পরে তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ এবং যুদ্ধাহত ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর সেনা ও অফিসারদের উত্তরসূরীদের ‘মুজিব বৃত্তি’ প্রদানের একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন এবং বৃত্তি প্রদান করেন।