বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দেশে কমছে জাপানি এনজিও

  •    
  • ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ২০:১০

ওহাশি মাসাকি বলেন, ‘এই খাতে অভিজ্ঞ বিদেশিদের ভিসা কমিয়ে দেয়া এবং ন্যূনতম বাজেট সীমা বৃদ্ধি করার কারণেই জাপানি এনজিওর সংখ্যা কমছে।’

দেশে আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতে বছরের পর বছর পাল্লা দিয়ে দেশীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) সংখ্যা বাড়লেও কমতে শুরু করেছে জাপানভিত্তিক এনজিও সংস্থা। একুশ শতকের শুরুতে ২০০১ সালে বাংলাদেশে জাপানের ৩১টি এনজিও কাজ করলেও বর্তমানে সে সংখ্যা নেমে এসেছে অর্ধেকের কমে। বর্তমানে দেশে জাপানভিত্তিক এনজিওর সংখ্যা মাত্র ১৩টি। তবে শুধু দেশেই নয় গোটা দক্ষিণ এশিয়াতেই জাপানভিত্তিক এনজিওর সংখ্যা কমে আসছে।

৮০-এর দশকে দেশীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) ছিল ৪৫টি। তিন যুগের বেশি সময়ের ব্যবধানে সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ২৫৪টি।

রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনে বুধবার জাপানভিত্তিক এনজিও শাপলা নীড়ের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা অধ্যাপক ওহাশি মাসাকির বিশ্লেষণে এসব উঠে আসে। বাংলাদেশে দেশীয় এনজিওর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মুদ্রাস্ফীতি এবং জাপানের অর্থনীতি সংকুচিত হয়ে যাওয়ার ফলে জাপানি এনজিওর সংখ্যা কমার প্রবণতা লক্ষ্য করছেন এই উন্নয়ন কর্মী।

শাপলা নীড় জাপানভিত্তিক আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশে স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকেই কাজ করছে। সংস্থাটি ১৯৭২ সাল থেকে প্রান্তিক শিশুদের শিক্ষা অধিকার নিশ্চিত করা, শিশু সুরক্ষা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং গ্রামীণ উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।

গোটা দক্ষিণ এশিয়াতেই জাপানভিত্তিক এনজিওর সংখ্যা কমে আসছে। ২০০১ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় ১৫৪টি জাপানি এনজিওর কার্যক্রম ছিল। বর্তমানে সে সংখ্যা অর্ধেকের কম মাত্র ৬২টি। যার মধ্যে বাংলাদেশে ১৩টি, ভারতে ২৫টি, পাকিস্তানে ৪টি, নেপালে ১১টি এবং শ্রীলঙ্কায় ৯টি এনজিও কাজ করছে বলে জানান ওহাশি মাসাকি।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সরকার বিদেশি এনজিওর নিবন্ধন এবং শর্তাবলি কঠিন করে ফেলাকে অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করছেন এই উন্নয়নবিদ। তিনি বলেন, ‘এই খাতে অভিজ্ঞ বিদেশিদের ভিসা কমিয়ে দেয়া এবং ন্যূনতম বাজেট সীমা বৃদ্ধি করার কারণেই জাপানি এনজিওর সংখ্যা কমছে।’

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ এবং নেপালে বিদেশি এনজিওকে স্বাগত জানানো হয় বলে মনে করেন মাসাকি। তবে অন্য দেশগুলোতে তেমনটা হয় না বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, ‘শাপলা নীড় বাংলাদেশের মানুষের উন্নয়নে কাজ করছে। একই সঙ্গে জাপান-বাংলাদেশ সম্পর্ক দৃঢ় করতেও কাজ করছে। এ ছাড়া মেট্রোরেল, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ, মাতার বাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো মেগা প্রকল্পগুলোতে জাপান বাংলাদেশকে সহায়তা করছে।’

এই প্রকল্পগুলো চালু হলে বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান বদলে যাবে বলে মনে করেন তিনি।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর পরিচালক তপন কুমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘জাপান আমাদের পরম বন্ধু হিসেবে প্রমাণিত। বিভিন্ন সংকটে দেশটি আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে এনজিও এবং সরকারের মধ্যে সম্পর্ক সব সময়ই ভালো। বর্তমানে সেটা সবচেয়ে ভালো অবস্থায় আছে৷’

বাংলাদেশে জাপানি এনজিওর সংখ্যা কমে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো সব এনজিওর পাশে দাঁড়াতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোতে প্রতিদিন শত শত ফাইল আসে৷ আমাদের অফিসের সময় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা। কিন্তু প্রতিদিন আমরা ৪টা-৫টা পর্যন্ত কাজ করি।’

শাপলা নীড় এনজিও থেকে সুবিধাভোগী এক নারী হাসিনা আক্তার। তিনি বলেন, ‘আমার মায়ের মানসিক সমস্যা ছিল। মা ৫ বছর বয়সে আমাকে ঢাকা নিয়ে আসেন। রাস্তায় থাকতাম। তখন শাপলা নীড় আমাকে তাদের সেন্টারে নিয়ে আসে। তখন শিশু পাচারের ঘটনাও ঘটত। সেখানে অনেক জাপানিরা আসত। ইউনিসেফ প্রজেক্টে আমি শিক্ষকতা করেছি। আমি গ্রাফিক্স শিখেছি, টেইলারিং শিখেছি। শাপলা নীড় প্রতিটি জেলায় কাজ করুক, গ্রামে কাজ করুক। কারণ গ্রাম থেকে ঢাকায় এসব শিশুরা আসে। শাপলা নীড় আমার কাছে মায়ের মতো।’

এ বিভাগের আরো খবর