চট্টগ্রামে বিলের টাকার জন্য ক্লিনিকে আটকে রেখে অক্সিজেন খুলে নেয়ায় সদ্য ভূমিষ্ঠ সংকটাপন্ন যমজ শিশুর মৃত্যুর যে অভিযোগ উঠেছে, তা সত্য নয় বলে দাবি করেছে পুলিশ। ক্লিনিকের আটক স্বাস্থ্যকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদের পর এ তথ্য জানিয়েছেন ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাখাওয়াৎ হোসেন।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মৃত শিশুদের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা চারজনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। প্রাথমিকভাবে অভিযোগ অসত্য বলে জানতে পারায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
‘মূলত যমজ নবজাতক অপরিণত ছিল, গর্ভধারণের সাত মাসেই তাদের জন্ম হয়। একজন জন্মের এক ঘণ্টা পর মারা গেছে, অন্যজন বাড়ি নেয়ার পথে মারা গেছে। বিলের জন্য অক্সিজেন খুলে নেয়া বা নবজাতক আটক রাখার ঘটনাও পুরোপুরি সত্য না।’
নগরীর ডবলমুরিং থানার ঝরনাপাড়া এলাকার মাতৃসেবা নরমাল ডেলিভারি সেন্টারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছিলেন মৃত শিশুদের বাবা অটোরিকশাচালক মনির আহমেদ।
পুলিশের এই বক্তব্যের পর কল করা হলে ‘পরে কথা বলব’ বলেই ফোন কেটে দেন। এরপর আর ফোন ধরেননি।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে মনির অভিযোগ করেন, ১০ হাজার টাকা বিলের মধ্যে ৫ হাজার টাকা তাৎক্ষণিক দিতে না পারায় সংকটাপন্ন অবস্থাতেও দুই নবজাতককে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে না পাঠিয়ে ক্লিনিকে আটকে রাখে কর্তৃপক্ষ। তাদের মুখের অক্সিজেনও খুলে নেয়া হয়।
নিউজবাংলাকে মনির বলেন, ‘মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে আমার স্ত্রী লাভলীর প্রসব বেদনা শুরু হলে তাকে এলাকার মাতৃসেবা নরমাল ডেলিভারি সেন্টারে ভর্তি করাই। ৩০ মিনিট পর আমাদের যমজ শিশু জন্মগ্রহণ করে। এর আধা ঘণ্টা পরে তারা জানায় যে বাচ্চাদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
‘এ সময় তারা আমাদের ১০ হাজার টাকার বিল দেয়। আমি বললাম যে এটা তো নরমাল ডেলিভারি, ৫ হাজার টাকা রাখেন। বাচ্চার চিকিৎসা শেষে বাকি ৫ হাজার দেব। কিন্তু তারা বাচ্চাদের বের করতে দেয়নি। অক্সিজেনও খুলে ফেলছে। তিন ঘণ্টা পর টাকা নিয়ে গেলে তারা আমাদের মৃত বাচ্চা দেয়।’
কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকেন, ‘ওরা টাকার জন্য আমার বাচ্চা মেরে ফেলছে। তাদের কারণে বাচ্চা মারা গেছে, তাদের শাস্তি চাই।’
অভিযোগ পেয়ে ওসি মো. সাখাওয়াৎ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাতৃসেবা নরমাল ডেলিভারি সেন্টার বন্ধ করে চার স্বাস্থ্যকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যান। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয় বলে জানান ওসি।