জাতীয় পার্টিতে কোনো সংকট নেই, ফলে ভাঙনের মুখে পড়বে না বলে মনে করেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এমন কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জি এম কাদের বলেন, ‘জাতীয় পার্টিতে কোনো সংকট নেই, ভাঙনের মুখেও পড়বে না জাতীয় পার্টি।’
সম্প্রতি জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ দলে কাউন্সিলের ঘোষণা দেন। দলটির চেয়ারম্যানকে না জানিয়ে এমন ঘোষণা দেয়ার পর গুঞ্জন জোরালো হয়, জাতীয় পার্টি আবার ভাঙনের মুখে পড়তে যাচ্ছে।
রওশনের ঘোষণার পরের দিনই জি এম কাদেরসহ দলের অন্যরা তাকে সংসদের বিরোধী দলের নেতার পদ থেকে সরিয়ে দিতে চিঠি দেন স্পিকারের কাছে।
এরপরও দলে কোনো সংকট নেই দাবি করে কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রতিপক্ষ হিসেবে জাতীয় পার্টিকে বারবার ক্ষতি করতে চেয়েছে। যারা পার্টি ছেড়ে গেছে, তারা কেউ শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি। এভাবে কেউ চলে গেলেও জাতীয় পার্টি দুর্বল হবে না।’
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘বেগম রওশন এরশাদ আমাদের অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন। আমার অসুস্থতা বা দুর্ঘটনার সংবাদে তিনি বারবার ফোন করে খোঁজখবর নিয়েছেন।
‘তিনি বারবার বলেছেন, আমি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হতে চাই না। তিনি বারবার সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, জাতীয় পার্টি এখন ভালোভাবে চলছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আমাদের তিনি পরামর্শ দিতে পারেন, কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা বা না করা জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের এখতিয়ারে।
‘জাতীয় পার্টির শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বেগম রওশন এরশাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন। শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের মনে হয়েছে, তিনি কারও কথায় বা চাপে কাউন্সিল ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে। অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে বাইরের কিছু মানুষ হয়তো বেগম রওশন এরশাদের নাম ব্যবহার করে ভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে। যারা জাতীয় পার্টির কেউ না, কেউ হয়তো ছিল অনেক আগে জাতীয় পার্টিতে, আবার সুর্নিদিষ্ট অভিযোগে অনেককে পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তারা বেগম রওশন এরশাদকে অপব্যবহার করতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’
জি এম কাদের বলেন, ‘অসুস্থতার কারণে দীর্ঘ প্রায় এক বছর বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে তিনি অবদান রাখতে পারছেন না। তাই পার্টির সংসদীয় দল জাতীয় পার্টির ঐক্য রক্ষা ও পার্টিকে ষড়যন্ত্রের হাত থেকে বাঁচাতে বেগম রওশন এরশাদকে বিরোধীদলীয় নেতা না রাখার পক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গেল এক বছরে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল অসুস্থ বিরোধীদলীয় নেতার কর্মকাণ্ড নিয়ে ভাবেনি। এখন জাতীয় পার্টির স্বার্থেই বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
আবেদনের পর এখন স্পিকার বিধি অনুযায়ী তার সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও জানান তিনি।
আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়েও কথা বলেন কাদের। জানান, নির্বাচনের আগে দলীয় ফোরাম গঠনে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবে বলে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সঠিক পথে নেই দাবি করে আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশনকে সঠিক পথে আসার আহ্বান জানান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।