কক্সবাজারের টেকনাফে বিজিবির একটি চেকপোস্টে এক প্রবাসীকে ইয়াবা রাখার কথা বলে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে।
টেকনাফের কায়ুকখালীতে বাবার কবর জিয়ারত শেষে শ্বশুরবাড়ি চাঁদপুরে ফেরার পথে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়কে মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী মালয়েশিয়া প্রবাসী মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর। তিনি এখন কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভুক্তভোগী আব্দুল্লাহর বাড়ি টেকনাফের কায়ুকখালীতেই। তিনি দুটি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রী থাকেন কায়ুকখালীতে; দ্বিতীয় স্ত্রী-সন্তান বাবার বাড়ি চাঁদপুরে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই প্রবাসী তাকে নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন নিউজবাংলার কাছে। তিনি জানান, মঙ্গলবার টেকনাফের কায়ুকখালীতে তার বাবার কবর জিয়ারত করতে যান। জিয়ারত শেষে শ্বশুরবাড়ি চাঁদপুর যাওয়ার উদ্দেশে স্থানীয় ‘নীল দরিয়া পরিবহন’ নামে গাড়িতে করে রওনা দেন। মেরিন ড্রাইভ সড়ক হয়ে কক্সবাজার আসার পথে একটি চেকপোস্টে ইয়াবা থাকার কথা বলে তাকে গাড়ি থেকে নামান বিজিবির কয়েকজন সদস্য। এ সময় তাকে বেধড়ক পেটানো হয়। পরে ইয়াবা না পেয়ে তাকে আরেকটি গাড়িতে তুলে দেয়া হয়।
ওই গাড়িটি তাকে কক্সবাজার শহরের বাস টার্মিনাল এলাকায় নামিয়ে দিলে সড়কের পাশেই পড়ে থাকেন তিনি। পরে স্থানীয় এক পথচারী তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আব্দুল্লাহ বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে টেকনাফ থেকে মেরিন ড্রাইভ সড়ক হয়ে কক্সবাজার আসার পথে প্রথম যে চেকপোস্ট পড়ে, সেখানে আমাদের গাড়ি থামিয়ে আমাকে নামতে বলে। চেকপোস্টটি বিজিবির ছিল।
‘পরে অন্ধকারের মধ্যে আমাকে একটি কক্ষে ঢুকিয়ে ইয়াবা আছে কি না জিজ্ঞেস করেন। নাই বলতেই আমাকে মারধর শুরু হয়। এ সময় ভিডিও করে আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়, আমার কোনো অভিযোগ আছে কি না। বাঁচার জন্য কোনো অভিযোগ নাই বলি।’
যে পথচারী তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন তার নাম শামসুল আলম শ্রাবণ। কক্সবাজার শহরের বাস টার্মিনাল এলাকার এই বাসিন্দা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার টার্মিনাল এলাকায় রাস্তার পাশে পড়ে থাকেন এই মানুষটা। নাম জানতে চাইলে বলেন আব্দুল্লাহ। তার সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাই।’
এ বিষয়ে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে চেকপোস্টের ঘটনায় যারা জড়িত ছিল, তাদের বিজিবির সদর দপ্তরে আনা হচ্ছে। তদন্ত শেষে পরে বিস্তারিত বলা যাবে।’