বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ধানের সংগ্রহ ৩১ শতাংশ, চালের ৮৭

  •    
  • ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০

এছাড়া এবার ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৫ হাজার ৩৪১ টন। অর্জন হয়েছে মাত্র ৭ হাজার ৬৩১ টন। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৩১ শতাংশ ধান সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।

বগুড়ায় ইরি-বোরো মৌসুমে ৮৭ শতাংশ চাল সংগ্রহ করতে পেরেছে খাদ্য বিভাগ। কিন্তু ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে মাত্র ৩১ শতাংশ। সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে খোলা বাজারে ধান-চালের দাম বেশি হওয়ার কারণে এমন পরিস্থিতি বলে জানিয়েছে খাদ্য বিভাগ। বোরো মৌসুমে হওয়া ঝড়-বৃষ্টিকেও দায়ি করছেন ধান-চাল সংগ্রহে সংশ্লিষ্টরা।

এবার ইরি-বোরো মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয় গত ২৮ এপ্রিল; শেষ হয় ৩১ আগস্ট। বগুড়ায় ধান-চাল সংগ্রহের এই পরিসংখ্যান এই সময়ের।

বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সিদ্ধ চালের জন্য এবার চুক্তিবদ্ধ মিলের সংখ্যা ১ হাজার ১৩১টি, আতপ চালের জন্য ১২টি। এসব চালকল মালিকদের মধ্যে প্রায় সবাই সরকারকে ধান-চাল দিতে সমস্যায় পড়েছেন।

দুপচাঁচিয়া উপজেলার এমন একটি চালকল সুমন এন্টারপ্রাইজ। সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় এর মালিক আব্দুল হান্নানের চুক্তির ৯০ বস্তার প্রায় ২ দশমিক ৭ টন চাল সরকারকে দেয়া সম্ভব হয়নি।

হান্নান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকারের রেট ৪০ টাকা। আর বাজারে চালের দাম ৪৫ টাকা করে চলে। এমন অবস্থায় চাল দেয়ায় মিলারদের কেজিতে ৫ থেকে ৬ টাকা লোকসান হয়েছে। তবুও চুক্তি অনুযায়ী চাল দেয়া যেত। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ থাকায় ধানের মান ভালো ছিল না। ভালো চাল সংগ্রহ করতে সময় লেগেছে, ব্যয়ও বেড়েছে।’

একই উপজেলার আরেক চালকল মালিক গোলাম মুক্তাদির চুক্তির সব ধান-চাল সরকারকে দিয়েছেন। তবে এতে লোকসানই হয়েছে বলে মন্তব্য তার।

মেসার্স রাসেল চালকলের মালিক মুক্তাদির বলেন, ‘বিগত সময়ে সরকারকে ধান-চাল দিয়ে প্রতি টনে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা লাভ থাকত। কিন্তু এখন সরকারি রেটের চেয়ে বাজারে ধান-চালের দাম বেশি। এ কারণে ইচ্ছা থাকলেও সরকারি গুদামে ধান-চাল দেয়া কষ্টকর হয়ে পড়ে।

‘সরকারি গুদামে চাল ঝেড়ে পরিষ্কার করে দিতে হয়। এসব কাজে আমাদের ডাবল ক্যারিং খরচ পড়ে। এতে হিসাব করে দেখা যায় প্রতি কেজিতে গড়ে প্রায় ২ টাকা বাড়তি খরচ হয়। যাতে এ বাজারে টিকে থাকা কঠিন।’

বগুড়া খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলায় এবার ১২ উপজেলায় ৪০ টাকা কেজি দরে সিদ্ধ চালের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬১ হাজার ৭৩৫ টন। অর্জিত হয়েছে ৫৩ হাজার ৪৯৩ টন। অর্থ্যাৎ লক্ষ্যমাত্রার ৮৭ শতাংশ।

আতপ চালে চালকলগুলো কাছে চাহিদা ছিল ২৯৮ টন। সেখানে প্রায় ৯০ টনের মতো ঘাটতি রয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ।

এছাড়া এবার ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৫ হাজার ৩৪১ টন। অর্জন হয়েছে মাত্র ৭ হাজার ৬৩১ টন। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৩১ শতাংশ ধান সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।

এসব তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মাদ আশ্রাফুজ্জামান।

লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইরি-বোরো মৌসুমে এবার ধান ২৭ টাকা (১০৮০ টাকা মন) কেজি নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু খোলা বাজারেই এবার ধানের দাম এর চেয়ে বেশি ছিল। এ কারণে সাধারণ কৃষকদের মধ্যে সরকারি গুদামে ধান দেয়ায় অনিহা ছিল। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার এটিই প্রধান কারণ।

‘আবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এবার এই অঞ্চলে কিছু ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এই কারণে কৃষকরা গুদামে ধান দিতে পারেনি।’

গত বছর বগুড়ায় বোরো মৌসুমেও ব্যর্থ হয়েছিল ধান সংগ্রহ অভিযান।

বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ধান সংগ্রহ হয়েছিল লক্ষ্যমাত্রার ৫৮ শতাংশ। ২৫ হাজার ১৮৬ টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ধান সংগ্রহ হয়েছিল ১৪ হাজার ৬০৫ টন, যা লক্ষ্যমাত্রার ৫৮ শতাংশ। আর ৬০ হাজার ৪৯০ টন সেদ্ধ চালের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সংগ্রহ হয়েছিল ৫৯ হাজার ৭৩৮ টন। এটি লক্ষ্যমাত্রার ৯৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

এ বিভাগের আরো খবর