জলবায়ু উন্নয়নে অর্থায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ব্লু এবং গ্রিন বন্ডকে উৎসাহিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম।
ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় ইউএনডিপি (ইউনাইটেড ন্যাশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম) আয়োজিত জলবায়ু উন্নয়নে অর্থায়ন নিয়ে দুই দিনব্যাপী এক সম্মেলনে অংশ নিয়ে মঙ্গলবার তিনি এ কথা বলেন।
প্রথম দিনে ‘ইমপ্যাক্ট অব ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্সিং: পারস্পেক্টিভ বাংলাদেশ’ বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।
‘সাউথ সাউথ এক্সচেঞ্জ: ইনটিগ্রেটিং জেন্ডার ইকুয়্যালিটি অ্যান্ড সোশ্যাল ইনক্লুসান ইন ক্লাইমেট বাজেটিং অ্যান্ড প্ল্যানিং প্রোসেস অ্যান্ড ইনোভেটিভ ক্লাইমেট ফাইন্যান্স ইন দ্যা এশিয়া-প্যাসিফিক রিজিওন’ নামের এই সম্মেলন চলবে আগামীকাল বুধবার পর্যন্ত।
ইউএনডিপির ক্লাইমেট ফাইন্যান্স নেটওয়ার্ক এবং ইউএন উইমেন-এর উদ্যোগে সম্মেলনটি আয়োজনে সহযোগী হিসেবে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া সরকারের ‘মিনিস্ট্রি অব উইমেনস এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড চাইল্ড প্রটেকশন’ ও ‘মিনিস্ট্রি অব ফাইন্যান্স’।
ইউএনডিপির আমন্ত্রণে বিএসইসি চেয়ারম্যান এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।
সম্মেলনে বাংলাদেশের বর্তমান জলবায়ু এবং বর্তমান বিশ্বমন্দা, জলবায়ু অর্থায়নের কার্যক্রম ইত্যাদি সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করেন শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি আফ্রিকা ও তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর সঙ্গে ইউরোপ-আমেরিকাতেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা থেকেই বোঝা যায় প্রকৃতি কতটা শক্তিশালী। মানবসৃষ্ট নানা কর্মকাণ্ড, জীবাশ্ম জ্বালানির অত্যধিক ব্যবহার, বন ধ্বংস, পানিসম্পদ বিনষ্টসহ নানাভাবে প্রকৃতি বিনষ্ট হচ্ছে এবং প্রকৃতি এসব থেকে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করছে।’
জলবায়ুর পরিবর্তনে বাংলাদেশ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানান অধ্যাপক শিবলী। বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের জিরো গ্রাউন্ড বলে আখ্যায়িত করেন তিনি।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশ সপ্তম মোস্ট ভালনারেবল দেশ এবং বাংলাদেশকে বলা যায় জলবায়ু পরিবর্তনের গ্রাউন্ড জিরো। বন্যাপ্রবণ বাংলাদেশের দুই তৃতীয়াংশই সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১৫ ফুট উচ্চতায় রয়েছে।
‘আমাদের দেশের প্রায় ৩ কোটি মানুষ গৃহহীন হয়েছেন অথবা হওয়ার শঙ্কায় আছেন। মাটির লবণাক্ততা এবং পানির অভাবসহ জলবায়ু পরিবর্তনের নানা প্রভাবে বাংলাদেশের কৃষি এবং অর্থনীতি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।’
বাংলাদেশের জলবায়ু সংশ্লিষ্ট পলিসিসমূহ যেমন- ১৯৯৫ এর পরিবেশ রক্ষা আইন, ২০১০ এর জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট আইনসহ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন পদক্ষেপের অর্থায়ন ও বাস্তবায়নের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।
এ ছাড়া বৈদেশিক ও নিজস্ব অর্থ সহায়তায় সম্পাদিত কার্যক্রমগুলো এবং এর বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাগুলো ব্যাখ্যা করেন শিবলী।
জলবায়ু অর্থায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সরকারি এবং বেসরকারি অপশনগুলো আলোচনা করে শিবলী রুবাইয়াত বলেন, ‘আমরা ব্লু এবং গ্রিন বন্ডকে উৎসাহিত করছি।’
সামাজিক নানা অর্থনৈতিক বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির কথা তুলে ধরে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলাতে বাংলাদেশের সাফল্যের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সম্মেলনে ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ, ফিজি, কম্বোডিয়ার মতো অংশগ্রহণকারী দেশ নিজ প্রেক্ষিতে জলবায়ু ও লিঙ্গসমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বাজেটিং এবং জলবায়ু অর্থায়নের ক্ষেত্রে নিজস্ব সমন্বিত অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তুলে ধরে।