রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে পাইলট নিয়োগে ওঠা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) সংলাপে তিনি এ কথা জানান।
বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এসেছে পাইলট নিয়োগের বিষয়ে। এটা সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তদন্ত করা হয়েছে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে। আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমরাও তদন্ত করেছি। বিমানের নিজস্ব তদন্তও হয়েছে। এর মধ্যে ইনিশিয়ালি যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে, সম্ভবত ৯ জন তারা সিলেক্ট করেছিল। এর মধ্যে কয়েকজন বাদ পড়েছে বা জয়েন করেনি।
‘কয়েকজন সিমুলেটিং প্রশিক্ষণে বর্তমানে আছে। তারা সেখান থেকে আসার পরে রিপোর্ট পর্যালোচনা করে তাদের চাকরির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এটাই সবশেষ তথ্য আছে আমার কাছে। তাদের পারফরম্যান্স ট্রেনিংয়ের পর তাদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
বিমানে পাইলট নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তদন্ত দাবি করে গত ২৮ আগস্ট বাংলাদেশ পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে একটি চিঠি পাঠায়।
বাপা নির্বাহী কমিটির পাঠানো এ চিঠিতে বলা হয়, পাইলট নিয়োগের ক্ষেত্রে বিমানের অপারেশনাল নির্দেশনা (ম্যানুয়াল), বাপার সঙ্গে বিমানের চুক্তি চরমভাবে লঙ্ঘন হয়েছে। বাপা এসব নিয়ে প্রশ্ন তুললেও তা আমলে নেওয়া হয়নি। নতুন করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া ওই ফ্লাইট অফিসাররা নিয়মিত ফ্লাইট অফিসার হিসেবে ফ্লাই করতে পারবেন না, যতক্ষণ না তারা ৩০০ ঘণ্টা ফ্লাই করছেন। এসব ফ্লাইট অফিসারের জন্য এখন বিমান বড় অঙ্কের টাকা খরচ করে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
বিমানের নিয়োগ প্রক্রিয়ার দায়িত্বে থাকা প্রশিক্ষণ বিভাগের (সিওটি) প্রধানের স্ত্রী পাইলট হিসেবে নিয়োগ পেতে যে আবেদন করেছেন তাকে স্বার্থের দ্বন্দ্ব বলেও দাবি করা হয়েছে চিঠিতে।
চিঠিতে বাপা দাবি করেছে, ফ্লাইট অফিসার পদে একজন এয়ারলাইনস ট্রান্সপোর্ট পাইলট তার লাইসেন্সের ক্ষেত্রে ভুয়া সনদ দেখিয়েছেন। তিনি তার বাধ্যতামূলক সিমুলেটর প্রশিক্ষণে অংশ নেননি। পরবর্তী সময়ে তাকে বিমান নিজ খরচে প্রশিক্ষণে পাঠায়, যা অপচয়।
বিমানের বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজের জন্য জ্যেষ্ঠ পাইলটদের পাশ কাটিয়ে এক জুনিয়র পাইলটকে প্রশিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, যাকে অনৈতিক হিসেবে দাবি করেছে বাপা।
প্রাথমিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দায়িত্বে থাকাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তদের বিষয়েও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী।
তিনি বলেন, ‘যারা প্রাথমিকভাবে তাদের সিলেক্ট করেছিল, যেহেতু হাতে তদন্ত রিপোর্ট আছে, তাদের বিরুদ্ধেও আমরা ব্যবস্থা নেব।’