উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দেশের প্রথম মেট্রোরেল চালুর বছর দেড়েক আগেই ভাড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া ঠিক করা হয়েছে ৫ টাকা। তবে সর্বনিম্ন ভাড়া ঠিক করা হয়েছে ২০ টাকা। অর্থাৎ একটি স্টেশন থেকে আরেক স্টেশনে নামলেও একই ভাড়া দিতে হবে।
২০ কিলোমিটারের পুরো লাইনের ভাড়া ঠিক করা হয়েছে ১০০ টাকা। অর্থাৎ কেউ মতিঝিল থেকে উঠে উত্তরার দিয়াবাড়ী বা দিয়াবাড়ী থেকে মতিঝিল গেলে এই ভাড়া দিতে হবে।
দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত যেতে ভাড়া গুনতে হবে ৬০ টাকা। প্রতিদিন ১০ সেট ট্রেন চলবে। প্রথম অবস্থায় ভোর ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চলবে এসব ট্রেন। প্রথম অবস্থায় ১০ মিনিট অন্তর অন্তর ছেড়ে যাবে ট্রেন। তবে চাহিদা বাড়লে ট্রেন বাড়বে, সমেয়র ব্যবধানও কমে আসবে।
মঙ্গলবার দুপুরে উত্তরায় মেট্রোরেলের ডিপোতে মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্যকেন্দ্র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি জানান, যাত্রীরা টিকিট কেটে যেমন একবার যাতায়াত করতে পারবেন, তেমনি থাকবে সাপ্তাহিক বা মাসিক কার্ডের ব্যবস্থাও। সাপ্তাহিক কার্ডে ৭ দিন আর মাসিক কার্ডে পুরো মাসে যতবার খুশি ততবার যাতায়াত করা যাবে। পরিবারের একাধিক সদস্যের জন্যও একটি কার্ড করার ব্যবস্থা থাকবে। এসব কার্ড করলে আলাদা টিকিট কাটার দরকার পড়বে না। আর এই কার্ডে ভাড়ায় ছাড়ও থাকবে।
কাদের জানান, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা বিনা মূল্যে এই ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারবেন। শিক্ষার্থীদের ভাড়ায় কোনো ছাড় দেয়া হবে কি না, এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
আগামী ডিসেম্বরে এই লাইনে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রথম অংশ এবং আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ট্রেন চালুর লক্ষ্যে কাজ চলছে। অবশ্য ট্রেন মতিঝিল ছাড়িয়ে যাবে কমলাপুর পর্যন্ত। সেই অংশের কাজ এখনও শুরু হয়নি।
এখন পর্যন্ত মেট্রোরেলের সার্বিক কাজের অগ্রগতি ৮১ দশমিক ৭ শতাংশ। দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত কাজ হয়েছে ৯৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ, আর মতিঝিল পর্যন্ত ৮১ দশমিক ৬৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
পুরো লাইনে ইলেক্ট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল কাজ শেষ হয়েছে ৮৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
২০১২ সালে অনুমোদন পাওয়া মেট্রোরেল লাইন-৬-এর মূল ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এতে অর্থায়ন করে উন্নয়ন সংস্থা জাইকা।
শুরুতে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০.১০ কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মাণের কথা ছিল। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় মতিঝিল থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত আরও ১.১৬ কিলোমিটার যোগ হয়ে লাইনের দৈর্ঘ্য হয় ২১.২৬ কিলোমিটার। নতুন কাজের কারণে ব্যয় বেড়ে হয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা।
উত্তরা থেকে কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত ২১.২৬ কিলোমিটার পথে মেট্রোরেলের কাজ শেষ হতে আরও অন্তত দেড় বছর সময় বেশি লাগবে। একই সঙ্গে ব্যয় বাড়ছে ১১ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা।