চলতি বছরের বর্ষা মৌসুমটা গেছে প্রায় বৃষ্টিশূন্য। সইতে হয়েছে গ্রীষ্মের মতো তাপদাহ। শরতে এসেও সেই ধারাই থেকেছে। অবশেষে ভাদ্রের তৃতীয় সপ্তাহে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা মিলেছে। সোমবার রাজধানীতে ঝেপে নেমেছে বৃষ্টি। স্বস্তি ফিরেছে নগরজীবনে। তবে এই স্বস্তির বৃষ্টিতেও জলাবদ্ধতায় তৈরি হয়েছে আরেক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি।
সোমবার সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকার আকাশ ছিল মেঘলা। দুপুরের পর নামে ঝুম বৃষ্টি। এই ভারী বর্ষণে নগরীর গ্রীন রোড, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, কারওয়ান বাজার, মালিবাগ, গ্রীন রোড, ফার্মগেট, তেজগাঁও, মোহাম্মদপুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের প্রবেশপথ, হাকিম চত্বর, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে অফিসফেরত মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে।
জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ পাড়ি দিয়ে আসা সৌরভ মণ্ডল বলেন, ‘কারওয়ান বাজারের বিভিন্ন রাস্তায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। জমে থাকা বৃষ্টির পানির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্যুয়ারেজ লাইনের ময়লা। সেই দুর্গন্ধযুক্ত নোংরা পানি মাড়িয়েই চলতে হচ্ছে মানুষকে।’
গ্রীন রোড এলাকার মো. কবির বললেন, ‘বৃষ্টি হলেই এখানে পানি জমে। ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে এই অবস্থা। ৫ থেকে ১০ মিনিট বৃষ্টি হলেই পানি জমে। পানি অনেক সময় দোকানে ঢুকে মালামাল নষ্ট হয়ে যায়। আগে কোমরসমান পানি জমে যেত। এখন জলাবদ্ধতা একটু কম। ভারী বৃষ্টিতে আজ এই এলাকায় হাঁটুর ওপরে উঠে গেছে পানি। তাতে মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
নয়াপল্টন এলাকায়ও দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। এই এলাকার মুদি দোকানি আরিফ আহমেদ বলেন, ‘মূল সড়ক হাঁটু পানির নিচে। মানুষের চলাচলে খুব সমস্যা হচ্ছে। জমে থাকা পানির কারণে যানজটও দেখা দিয়েছে।’
এদিকে রাজধানীতে ঝুম বৃষ্টি হলেও আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত আগারগাঁও স্টেশনে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১ মিলিমিটার। তবে সার্বিকভাবে বৃষ্টির পরিমাণটা জানা যাবে সন্ধ্যা ৬টার পর।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, আগারগাঁও স্টেশনসংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টি কম হয়েছে। এখানে পুরো এলাকার বৃষ্টিপাতের হিসাব করা হয় না। যেখানে যন্ত্রটা বসানো থাকে সেখানেই হিসাব করা হয়। ৩টার পর যে বৃষ্টি হয়েছে সেটা সন্ধ্যা ৬টার পর জানা যাবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘চলতি মাসে বৃষ্টির এই ধারা অব্যাহত থাকবে। বৃষ্টি এক দিন কমবে তো আরেক দিন বাড়বে। ১২ সেপ্টেম্বরের পর দেশজুড়ে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।’