রাজধানীর উত্তরার জসীমউদ্দীন মোড়ে প্যারাডাইজ টাওয়ারের সামনের বাস র্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি প্রকল্পে ফ্লাইওভারের বক্স গার্ডার দুর্ঘটনায় দুই শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যুতে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গেঝুবা গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেডকে (সিজিজিসি) দায়ী করেছে সরকারের গঠিত তদন্ত কমিটি।
সচিবালয়ে রোববার বিকেলে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
ঢাকার ব্যস্ততম রাস্তায় প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ঠিকদারি প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তা নিশ্চিত ও যান নিয়ন্ত্রণে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে উঠে এসেছে তদন্তে।
সেই দুর্ঘটনার জন্য ১২টি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এগুলো হলো পূর্ব অনুমতি ছাড়া বন্ধের দিন কাজ করা; দিনের বেলা গার্ডার স্থানান্তর, এদিনই প্রথম তারা এটা করেছে; ক্রেনটি সহকারী দিয়ে পরিচালনা করা; ক্রেনের লাইসেন্স ছিল না; অসমতল জায়গায় ক্রেন রাখা; ডিজিটাল ডিসপ্লে ছিল না।
এ ছাড়া ট্রাফিক ব্যবস্থাপন ছিল না; নিজেরা যে লোক রেখেছিল তারা যোগ্য ছিল না; সেফটি প্রকৌশলীর যোগ্যতা ছিল না; সিকিউরিটি ইমারজেন্সি ছিল না; যাদের কাজ করতে আনা হয় তাদের অনুমতি ছিল না এবং বিশেষজ্ঞের অনুমতি ছাড়া কাজ চলছিল।
কমিটির প্রতিবেদনে ঠিকাদারকে আইনের আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়েছে।
গত ১৫ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডার পড়ে পাঁচজন নিহত হন। সেদিনই পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আরবান ট্রান্সপোর্ট অনুশাখার অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আখতার এই তদন্ত কমিটির নেতৃত্ব দেন।
আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, ‘ঘটনার পর প্রথমে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়, পরে সেটি বাড়িয়ে পাঁচ সদস্য করা হয়। গঠিত কমিটি প্রাথমিক প্রতিবেদন দেয়। এরপর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়- বুয়েটের বিশেষজ্ঞকে কমিটিতে যুক্ত করা হয়। তদন্ত করতে গিয়ে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সে সঙ্গে সে ঘটনায় গ্রেপ্তার সবার বক্তব্য নেন।
‘তদন্ত কমিটি দুর্ঘটনার দায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছে। ভিডিও ফুটেজে তার বিবরণ আছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বলছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ৩৪টি পত্র প্রেরণ করেছে। কিন্তু পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সেটি মন্ত্রণালয়ে জানায়নি। তারা সেটি জানালে আমরা চায়নিজ কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারতাম।’