মহাসচিব মুজিবুল হক চু্ন্নুকে দায়িত্বে রেখে জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ দলের যে সম্মেলন ডেকেছেন, তাকে ‘ষড়যন্ত্র’ আখ্যা দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে কেউ সফল হবে না।’
আগামী জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় রোববার এমন মন্তব্য করেন চুন্নু।
জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্টপোষক রওশন গত বুধবার গণমা্ধ্যমে পাঠানো এক চিঠিতে আগামী ২৬ নভেম্বর দলের সম্মেলন ডাকেন।
রওশন যে সম্মেলন ডেকেছেন তার সামগ্রিক কর্মকাণ্ড ও তৃণমূল পর্যায়ে দেশব্যাপী নেতাকর্মীদের সমন্বয়ের জন্য দলের ছয় কো-চেয়ারম্যানকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। এদের মধ্যে আছেন মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুও যাকে এই পদে নিয়োগ দিয়েছেন জি এম কাদের নিজেই।
তবে চুন্নু যে রওশনের সঙ্গে নেই সেটি পরের দিনই স্পষ্ট হয়। তার জন্মদিনে জি এম কাদের শুভেচ্ছা জানাতে যান।
চুন্নু তার অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘জাতীয় পার্টি নিয়ে আর কেউ খেলতে পারবে না। জিএম কাদের এর নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি এখন যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। যারা জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে চায়, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে কেউ সফল হবে না।
‘জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা প্রয়োজনে জীবন দিয়ে পার্টির বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র নসাৎ করে দেবে।’
বৃহস্পতিবারই রওশনকে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে সরিয়ে জি এম কাদেরকে পদে বসাতে স্পিকার শিরীন শারমিনকে চিঠি দেন দলেল সংসদ সদস্যরা। যদিও রওশনকে সরানোর বিষয়ে তার শারীরিক অসুস্থতাকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
সম্ভাব্য প্রার্থীদের উদ্দেশে চুন্নু বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন কারও জন্যই সহজ হবে না। যেনতেন নির্বাচন করে কেউ আর পার পারে না। আমরা তিন শ আসনেই নির্বাচন করতে প্রস্তুতি নিচ্ছি। ত্রিমুখি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে সকলকে।’
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ক্ষমতার দ্বন্দ্বে সহিংসতা শুরু করেছে উল্লেখ করে জাপা নেতা বলেন, ‘দেশের মানুষ সহিংস রাজনীতি পছন্দ করে না। এই সুযোগে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের উন্নয়ন ও সুশাসনের দাওয়াত পৌঁছে দেবে।’
আগামী নির্বাচন অনেকের জন্যই অস্তিত্বের প্রশ্ন হয়ে দেখা দেবে বলেও মনে করেন জাপা নেতা। বলেন, ‘যারা পরাজিত হবে, তারা ইতিহাস থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে।’
দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, এস এম মান্নান, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, সুনীল শুভরায়, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, সফিকুল ইসলাম সেন্টু, আব্দুর রশীদ সরকার, আলমগীর সিকদার লোটন, এমরান হোসেন মিয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল আলম রুবেলও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।