কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে অন্যের সন্তানকে নিজের দাবি করে মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটানো স্কুলশিক্ষকের ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম তৌফিকুর রহমানকে দেয়া হয়েছে তদন্তের দায়িত্ব।
নিউজবাংলার অনুসন্ধানে আলেয়া সালমা নামে ওই শিক্ষকের ছুটি নিয়ে প্রতারণার বিষয়টি সামনে এলে তদন্ত কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম। তিনিই রোববার নিউজবাংলাকে এসব নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আলেয়া সালমা কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার মনিয়ারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার স্বামী শফি আহমেদ স্বপন বগুড়ার গাবতলী উপজেলা কাগইল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়কও।
নিউজবাংলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতিবেশীর শিশুকে নিজের নবজাতক সন্তান দাবি করে চলতি বছরের ১৪ মার্চ থেকে ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটাচ্ছেন তিনি। থাকছেন স্বামীর সঙ্গে বগুড়ার গাবতলী কাগইল ইউনিয়নের বাড়িতে। ওই শিশুটি তাদের প্রতিবেশী আনিছুর রহমান পাশা ও শারমীন দম্পতির।
অনুসন্ধানের বিষয়টি জানার পর নিউজবাংলার প্রতিবেদকের সহকর্মীকে কল করে সংবাদ প্রকাশ না করতে বলেন সালমা।
তিনি বলেন, ‘ওখানে আমি ডিপিও, এটিও সবার সঙ্গে কথা বলে কাগজপত্র দিয়ে ছুটি নিয়ে এসেছি। এসব নিয়ে নিউজ করবেন না। নিউজ করে কিছু হবে না।’
ফোনে সালমা আরও বলেন, ‘আমার এখান থেকে কুড়িগ্রামে গিয়ে চাকরি করা সম্ভব? সম্ভব না। আমি রোববার জয়েন করে এসেছি। আমি আবার ছুটির আবেদন করেছি। ১৪ দিনের ছুটি নেব। এ ছুটি শেষ হলে আবার ১৪ দিনের ছুটির আবেদন করব।’
আলেয়া সালমা আরও বলেন, ‘যতদিন ট্রান্সফার না হবে, আমি ছুটি নিয়েই চলব। আমি একটা সরকারি চাকরি করি। আমাদের সিস্টেম আছে। চাকরিচ্যুত করার ক্ষমতা সরকারেরও নেই। এর জন্য ডাক্তার, হাসপাতালসহ যে যে কাগজ লাগবে, সব দেয়া হবে। আপনি এগুলা নিউজ-টিউজ এখন আর করেন না।’
তার স্বামী শফি আহমেদ ফোনে বলেন, ‘আমি সালমাকে কুড়িগ্রামে চাকরি করতে দেব না। ওকে এখানে নিয়ে আসব। ট্রান্সফারের সব কাজ রেডি। এখন ট্রান্সফার বন্ধ আছে। চালু হলেই নিয়ে আসব। এগুলো নিয়ে নিউজ করে কিছুই হবে না। শুধু হয়রানি। আমরা সবাইকে ম্যানেজ করতে পারব।’