বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শাওন হত্যা: পুলিশের বিরুদ্ধে বিএনপির মামলা নিল না আদালত

  •    
  • ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৭:৩৭

গত বৃহস্পতিবার বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে নারায়ণগঞ্জে মিছিলে যাওয়া নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। নেতাকর্মীদের ইটপাটকেলের জবাবে পুলিশ ব্যবহার করে বুলেট, রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস। এতে নিহত হন শাওন প্রধান, যাকে যুবদল সদস্য বলছে বিএনপি।

নারায়ণগঞ্জে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে শাওন প্রধান নিহতের ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৪২ জনকে আসামি করে বিএনপির মামলার আবেদন ফিরিয়ে দিয়েছে আদালত।

গত বৃহস্পতিবার সংঘর্ষের ঘটনায় এই প্রাণহানি নিয়ে বিক্ষোভের মধ্যে রোববার সকালে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ইমরান হোসেন মোল্লার আদালতে মামলার আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিকেলে সেটি খারিজ করে দেন বিচারক।

বিকেলে ৫টার দিকে নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বিএনপির নেতা রুহুল কবির রিজভীর মামলার আবেদন ২০৩ ধারায় খারিজ করে দিয়েছে আদালত।’

তিনি আরও বলেন, ‘আদালত যদি মনে করেন, মামলাটি গ্রহণের পর অগ্রসর হওয়ার কোনো কারণ নেই, তাহলে আদালত মামলাটি খারিজ করে দিতে পারেন।’

বেলা ১১টার দিকে রিজভী আদালতে উপস্থিত হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে মামলার আবেদন করেন। আবেদনে হত্যা, জখম, গুরুতর জখম ও পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলার অভিযোগ আনা হয়।

এতে যাদের আসামি করতে আবেদন করা হয়, তারা হলেন জেলার পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল আলম, গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) এসআই মাহফুজুর রহমান কনক, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান মোল্লা, উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুজ্জামান, ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমীর খসরু, কনস্টেবল শাহরুল আলম, মো. সোহাগ, মো. আরিফ দেওয়ান, ফেরদৌস দেওয়ান, সেলিম, রিপন, যুগল, মামুন, রিয়াজ, হাফিজ, এএসআই ইকবাল হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, সোহরাব, কনস্টেবল জাকির হোসেন, নাঈম, রাকিব, আনিস, সাইদুল, ইনজামামুল, রাসেল, খলিলুর রহমান, মোহসীন মিয়া, মোস্তাকিম, শাহাদাত হোসেন, ফখরুল ইসলাম, আরিফ দেওয়ান, দীপক সাহা, শাহীন, ফরিদ উদ্দিন, মুরাদুজ্জামান, শাহীন, কবির হোসেন, মান্নান, রুবেল ও সোহাগ৷

রিজভীর পক্ষের আইনজীবী মামলার বিষয়ে আইনজীবী মাসুদ তালুকদার বলেন, ‘পয়লা সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল৷ সমগ্র বাংলাদেশে বিএনপি শান্তিপূর্ণ মিছিল করেছে৷ কিন্তু নারায়ণগঞ্জসহ বাংলাদেশের কিছু স্থানে পুলিশ বিনা কারণে উসকানি দিয়ে শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ সরাসরি গুলি করেছে৷ এতে বহু নেতাকর্মী আহত হয়েছেন এবং যুবদলের কর্মী শাওন বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান৷ মিডিয়া, পত্রিকা এবং সেখানে যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের কাছ থেকে জেনে আদালতে এ মামলা দায়ের করলাম৷’

এই আইনজীবী বলেন, ‘পুলিশের এসআই কনক যার গুলিতে শাওন নিহত হয়েছেন তাকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে৷ এ ছাড়া জেলা পুলিশ সুপার, তিনজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর মডেল থানার ওসিসহ মোট ৪২ জন পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে৷’

মামলার আবেদনের পর রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি অন্যায় হয়েছে, চরম অন্যায়৷ কাটছাঁট করার পরও সংবিধানে এখনও যতটুকু অধিকার আছে তাতে গণতান্ত্রিক অধিকার হিসেবে সমাবেশ করা ও শোভাযাত্রা করার অধিকার আছে৷ সেই অধিকারটুকুই সরকার হরণ করেছে৷

‘এর প্রমাণ গত পয়লা সেপ্টেম্বরের ঘটনা৷ সরকার গণতান্ত্রিক অধিকারের কোনোটাই রাখতে চায় না৷ একদলীয় সরকারের যে নমুনা তারই চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে৷’

গত বৃহস্পতিবার বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে নারায়ণগঞ্জে মিছিলে যাওয়া নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। নেতাকর্মীদের ইটপাটকেলের জবাবে পুলিশ ব্যবহার করে বুলেট, রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস।

বিশেষ করে চায়নিজ রাইফেল দিয়ে মিছিলকারীদের দিকে পুলিশের গুলির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এর মধ্যে বিএনপির মিছিলে যাওয়া শাওন প্রধানের বুকে বিদ্ধ হয় একটি গুলি। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নেন নেতাকর্মীরা। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এই ঘটনায় শাওনের বড় ভাই মিলন প্রধান বিএনপির পাঁচ হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করেছেন। যদিও এই মামলা পুলিশ লিখে মিলনের কাছ থেকে সই নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মামলার পর থেকে মিলন লাপাত্তা। তবে পুলিশ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এই ঘটনায় পুলিশও আরেকটি মামলা করেছে তাদের ওপর হামলার অভিযোগ এনে। এতে আসামি করা হয়েছে বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে। মামলার পর থেকে নারায়ণগঞ্জে চলছে ধরপাকড়। পালিয়ে বেড়াচ্ছেন নেতারা।

এ বিভাগের আরো খবর