আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমপক্ষে ৭০ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেই কেন্দ্র দখল ঠেকাতে সবগুলোতেই ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা আছে।
এর আগে সর্বোচ্চ দেড় শ আসনে ইভিএম ব্যবহারের ঘোষণা দিলেও সর্বনিম্ন কত আসনে হবে, সে বিষয়ে কোনো ধারণা দেয়নি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি৷
রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর নতুন এই তথ্য দেন। জানান, এর আগে স্থানীয় কিংবা জাতীয় নির্বাচনে যেসব এলাকায় মেশিনটি ব্যবহার করা হয়েছে, সেখানেই তা ব্যবহার হবে।
গত ২৩ আগস্ট কত আসনে ইভিএমে ভোট হবে, সেটি চূড়ান্ত না করলেও সংখ্যাটি দেড় শর বেশি হবে না বলে সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
ইভিএম নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি ও সমমনাদের, এমনকি গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী জাতীয় পার্টির আপত্তির মুখে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ জন্য নতুন প্রকল্প নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ইভিএম কেনার বিষয়টা কমিশনের না। ইসি সচিবালয় দেখছে। তারা হয়তো একটা গাইডলাইন চাইতে পারে আমাদের কাছে।’
বর্তমানে নির্বাচন কমিশনের হাতে যে পরিমাণ ইভিএম আছে, সেগুলো দিয়ে এত আসনে ভোট করা সম্ভব নয়। এ কারণে নতুন মেশিন কিনতে হবে। তবে মেশিন কেনা নিয়ে অনিশ্চয়তাও আছে।
কমিশনার আলমগীর বলেন, ‘প্রকল্প পাস না হলে বা বৈশ্বিক ক্রাইসিস পরিস্থিতিতে যদি অর্থ ছাড়া না হয়… হার্ডওয়্যার যদি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি বিদেশ থেকে না আনতে পারে তাহলে তো হবে না। তবে আমাদের যে সক্ষমতা বর্তমানে আছে, এতে ৭০-৮০টি আসনে নিশ্চিত। আমাদের যা ইভিএম আছে তা দিয়ে ৭০-৮০টায় হবে।’
সব কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা
২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ভোট হবে বলেও জানান আলমগীর।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সব কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছিল। আগামী জাতীয় নির্বাচনে সব কেন্দ্রে এই ক্যামেরা বসানোর চিন্তা আছে বলেও জানান মো. আলমগীর।
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘৩০০ আসনের সব কেন্দ্রেই সিসি ক্যামেরা রাখার ইচ্ছা আছে। সিদ্ধান্ত হয়নি এখনও। সম্ভব হলে সব ভোটকক্ষেই দেব।
‘আমরা এটা আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে দেব। কারণ সংরক্ষণ, মেরামতের বিষয় আছে। ভোটের পর তারা সিডি দেবে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যেমন দিয়েছে। সেখানে সব কিছুর রেকর্ড থাকবে।’
সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপে নির্বাচনি ব্যবস্থাপনার পুঙ্খানুপুঙ্খ পরিকল্পনা থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রোডম্যাপ চূড়ান্ত। এখন প্রকাশের অপেক্ষা। প্রিন্ট হলেই প্রকাশ হবে। সচিবালয় বিষয়গুলো দেখছে। ভুল থাকলে কেউ ধরিয়ে দিতে পারবে।’