কৃষকের বাড়ি থেকে একের পর এক ‘চুরি’ হয়ে যাচ্ছিল মুরগি। অবশেষে ধরা পড়ল ‘চোর’। আর তাকে নিয়ে বনদপ্তরের কার্যালয়ে ঢুকে ওই কৃষক চেয়েছেন ক্ষতিপূরণও।
তবে চোরকে দেখে রীতিমত চমকে গেছেন বনদপ্তরের কর্মকর্তারা। কারণ মুরগি চোর আর কেউ নয়, ১০ ফুটের একটি অজগর।
পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ার বান্দোয়ানে শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে। এদিন সকাল ১০টায় বান্দোয়ান- ১ বনাঞ্চলের দপ্তরে সাপ কোলে নিয়ে যান ওই কৃষক।
চন্দন মূর্মু নামের ৬০ বছরের ওই কৃষক বলেন, ‘রোজ রোজ মুরগি চুরি যাওয়ায় বেশ চিন্তায় পড়েছিলাম। সকালে বাড়ি থেকে বের হচ্ছিলাম। দেখি, বিশাল আকারের একটা সাপ। তখন বুঝতে অসুবিধা হয়নি, মুরগি চোর কে। তারপর সাপটিকে কোলে তুলে নিয়ে ক্ষতিপূরণের জন্য বনদপ্তরে চলে আসি।’
সাপটিকে না মেরে ধরে নিয়ে আসায় খুশি বনদপ্তর। ওই কৃষককে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছেন কর্মকর্তারা।
চাষবাসের পাশাপাশি চন্দন হাঁস-মুরগি পালন করেন। সাপটিকে কোলে নিয়ে ৪ কিলোমিটার পথ হেঁটে বনদপ্তরে আসেন তিনি।
তিনি জানান, তাকে বনদপ্তর থেকে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেয়া হয়েছে। একটি ফরম দেয়া হয়েছে, সেটি পূরণ করে জমা দিতে বলা হয়েছে।
বান্দোয়ান-১ বনাঞ্চলের কর্মকর্তা বিনয় মাহাতো বলেন, ‘ওই কৃষকের প্রশংসা না করে পারছি না। কারণ একের পর এক মুরগি খেয়ে ফেলার পরেও সাপটিকে না মেরে ওই কৃষক যেভাবে কোলে তুলে ৪ কিলোমিটার পথ হেঁটে বনদপ্তরের কার্যালয় পৌঁছেছেন, তা সত্যি প্রশংসনীয়।’
কংসাবতী দক্ষিণের বনকর্তা আমিতাভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘সাধারণত কোনো বন্যপ্রাণ ক্ষতি করলে তার উপর ক্রোধ জন্মায়। কিন্তু উনি যেভাবে ভালোবেসে সাপটিকে নিয়ে এসেছেন, তাতে বোঝা যায় উনি বুঝেছেন প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে সাপটিকে বাঁচিয়ে রাখা দরকার। ওই কৃষককে আমরা কীভাবে সম্মান জানাতে পারি, তা দেখছে আমাদের দপ্তর।’