শুধু নেতাকর্মীর আন্দোলন দিয়ে সরকার হটানো যায় না, সরকার হটাতে জনগণকেও স্বতস্ফূর্তভাবে আন্দোলনে নামতে হয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বিএনপির এখনকার আন্দোলনে নেতাকর্মীর বাইরে জনগণ যোগ দেয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ কারণে তাদের সরকার পতনের স্বপ্ন সুদূরপরাহত।’
রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে শনিবার সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিশ্ব পরিস্থিতিতে একটা সংকটময় অবস্থা চলছে। সারা বিশ্বই অস্থিরতার মধ্যে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম সরকারপ্রধান যিনি বলেছেন, আমাদের মানুষ কষ্টে আছে। তার মানে বাস্তবতা স্বীকার করে নিয়েছেন। তার পরও এখানে আন্দোলনের হাঁকডাক শোনা যায়।’
কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব আন্দোলন আন্দোলন করতে করতে গলা শুকিয়ে ফেলছেন। কিন্তু মরা নদীতে জোয়ার আসে না। জোয়ার কি আসবে কখনও? নেতাকর্মীর আন্দোলন দিয়ে ইতিহাসে সরকার হটানো যায় না।
‘এখনও আপনাদের সঙ্গে নেতাকর্মীর বাইরে জনগণ যোগদান করেনি। কোন মুখে বলেন, ফয়সালা হবে। আমিও বললাম হবে, হবে, ফয়সালা হবে। ফয়সালা হবে আগামী নির্বাচনে ফাইনাল খেলায়। তখন দেখা যাবে, কে হারে, কে জেতে।’
তিনি বলেন, ‘রাজপথে এখন কি চক্র আছেন আমরা জানি। টেমস নদীর ওপার থেকে দণ্ডিত অর্থ পাচারকারী, অপরাধী যুবরাজ হাঁকডাক দিচ্ছে। সেই ডাকে টেমস নদীতে ঢেউ উঠেছে কি না জানি না। তবে পদ্মা-মেঘনা-যমুনায় ঢেউ নেই। বিএনপির শুকনো নদীতে জোয়ার আর আসে না। ‘চিৎকার যত পারেন করুন, ফয়সালা হবে। আমিও বলছি ফয়সালা হবে। ফয়সালা হবে নির্বাচনে। আগামী নির্বাচনে ফয়সালা হবে।’
বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘রাজপথে হুমকি দিয়ে লাশ ফেলতে চান? আপনারা লাশ ফেলার দুষ্টচক্রে আবদ্ধিত। লাশ ফেলে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো আন্দোলনে ফয়সালা বিরোধী দল করতে পারেনি। সরকার হটাবেন? জনগণ সাড়া দিক, দেখি না।
‘এখনও কোথাও জনগণ সাড়া দেয়ার কেউ নেই। জনগণ কারও সঙ্গে মারামারি করে না। আপনাদের আন্দোলন মানেই হচ্ছে, নিজেরা নিজেরা মারামারি। আপনাদের বিক্ষোভ মানেই হচ্ছে, পুলিশের দোষ, পুলিশের ওপর হামলা। পুলিশের ওপর হামলা হলে পুলিশ আত্মরক্ষা করবে না?’
বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিএনপি হত্যা করেছে অভিযোগ করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সতর্ক করে দেন কাদের।
বলেন, ‘মির্জা ফখরুল, আপনাকে সতর্ক করে দিতে চাই। আপনাদের হাতে রক্তের অনেক দাগ। ২১ হাজার আওয়ামী লীগ কর্মী, আহসান উল্লাহ মাস্টার, মঞ্জুরুল ইমাম, শাহ এ এম এস কিবরিয়া, এদের রক্তে আপনাদের হাত রঞ্জিত। আমরা আপনাদের কাউকে হত্যা করিনি। হত্যা ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাস করি না। আমাদের নেত্রী ২০ বার হত্যার টার্গেটে পড়েছেন, কিন্তু খালেদা জিয়াকে কেউ মারতে যায়নি। কাকে অপবাদ দেন?’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড নিয়েও কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘যখনই আইনমন্ত্রী বললেন বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের তদন্তে কমিশন হবে, সঙ্গে সঙ্গেই বলে কি, জিয়াউর রহমান হত্যার কমিশন হবে। এ কমিশন ক্ষমতায় গেলে হবে, কবে।’
বিএনপি নেতাকে প্রশ্ন করে কাদের বলেন, ‘ক্ষমতায় যখন ছিলেন তখন কেন করলেন না? তাহলে নিশ্চয় আপনাদের মধ্যেও অনেকেই আছেন জিয়াউর রহমানকে হত্যার পেছনে দূরভিসন্ধিও আছে, চক্রান্তও আছে। তা না হলে কেন কমিশন করলেন না। লাশের কাহিনিও সবাই জানে। আমার প্রশ্নের জবাবে ফখরুল সব সময় নিরুত্তরই থাকেন।’